বারবার হোচট খেয়েও উঠে দাঁড়িয়েছেন বায়েজিদ

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৩২ এএম, ২২ ডিসেম্বর ২০২০

জি এম আদল

‘যদি লক্ষ্য থাকে অটুট, বিশ্বাস হৃদয়ে/হবেই হবেই দেখা, দেখা হবে বিজয়ে।’ উদ্যোক্তা হতে গেলে হোচট খেয়ে পড়ে গিয়ে উঠে দাঁড়ানোর সাহস থাকতে হবে, তবেই সফলতা ধরা দেবে। বারবার হোচট খেয়েও উঠে দাঁড়িয়ে যে ক’জন তরুণ উদ্যোক্তা চামড়াশিল্পে সফল হয়েছেন, তাদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান বায়েজিদ অন্যতম।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সম্ভাবনাময় একটি বড় খাত চামড়াশিল্প। এ শিল্পের উৎপাদিত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি দিনদিন বেড়েই চলেছে। তাই তো বায়েজিদের উদ্যোগের নাম ভাইপার লেদার। তিনি ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ ও এমবিএ সম্পন্ন করেছেন।

jagonews24

পড়াশোনা চলাকালীন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন বায়েজিদ। যেই ভাবনা; সেই কাজ। বাবার ইচ্ছা ছিল ছেলে সরকারি চাকরি করুক। ততদিনে বায়েজিদের মাথায় উদ্যোক্তা হওয়ার পোকা ঢুকে গিয়েছিল। শুরুর দিকের গল্পটা জানতে চাইলে বায়েজিদ বলেন, ‘২০১১ সালের দিকে ‘সেন্স অব কোয়ালিটি’ স্লোগানকে সামনে রেখে ভাইপারের যাত্রা শুরু।’

সেই সময়ে সরাসরি কারখানা থেকে কিছু চামড়াজাত পণ্য, যেমন- মানিব্যাগ, বেল্ট, ব্যাগ ইত্যাদি এনে পরিচিতজনদের কাছে বিক্রি করতেন। প্রচারণার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতেন ফেসবুককে। ভালো সাড়া পেয়েছিলেন। তৈরি করলেন ‘ভাইপার’ নামে ফেসবুক পেজ। এভাবেই যাত্রা শুরু ভাইপারের।

jagonews24

কয়েক বছরে ভাইপার এগিয়ে গেছে অনেক দূর। ফেসবুকের মাধ্যমে ভাইপারের যাত্রা শুরু হলেও এখন ঢাকার মালিবাগে এবং গাজীপুরে রয়েছে নিজস্ব শো-রুম। পণ্যের চাহিদাও বেড়েছে অনেক গুণ। অনেক ক্রেতারই এখন প্রথম পছন্দ ভাইপার লেদারের পণ্য।

বায়েজিদের পণ্য এখন দেশ থেকে বিদেশেও যাচ্ছে। ভাইপারের সিগনেচার প্রোডাক্টের মধ্যে জুতা, মানিব্যাগ, কী ওয়ালেট, টাইম ওয়ালেট, কী রিং, পাসপোর্ট, ওয়ালেট, কাভার, কার্ড হোল্ডার, বেল্ট, ব্যাগ অন্যতম। পাওয়া যায় চামড়ার নানা কাস্টমাইজ প্রোডাক্টও।

jagonews24

উদ্যোক্তা হিসেবে শুরু থেকে পথচলায় নানা প্রতিবন্ধকতার কথা বলতে গিয়ে বায়েজিদ বলেন, ‘শুরুর দিকে পথচলাটা মোটেও সহজ ছিল না। মানুষের নানা কথা শুনতে হয়েছে। প্রথমদিকে এ শিল্পে কারিগরি দক্ষতা না থাকায় অনেক হোচট খেয়েছি। নিজের করা কারখানাও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবুও ভয় পাইনি, থমকে যাইনি, মনোবল আর স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে গিয়েছি।’

সেই সময়ে বসে না থেকে বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। কারখানার কর্মচারীদের সাথে মিশেছেন, কথা বলেছেন। পণ্য কিভাবে তৈরি করে, তা সরেজমিনে দেখেছেন। বারবার নিজেকে ঝালিয়ে নিয়েছেন। তারপর আবার শুরু করেছেন।

jagonews24

কেউ পাশে ছিলেন কি না জানতে চাইলে বায়েজিদ বলেন, ‘পরিবার এবং বন্ধুদের পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে ‘চাকরি খুঁজব না চাকরি দিব’ গ্রুপের অপরিসীম সহযোগিতা ছিল। বিশেষ করে মুনির হাসান প্রথম থেকেই মেন্টর হিসেবে পাশে ছিলেন এবং এখনো আছেন।’

উদ্যোক্তা হিসেবে পথ চলতে গিয়ে বায়েজিদ পেয়েছেন ‘উদ্যোক্তা সম্মাননা ২০১৪’সহ বিভিন্ন সম্মাননা। তার নিজস্ব শো-রুম থেকে ক্রেতাদের কাছে পণ্য সরবরাহ করছেন। পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমেও প্রতিনিয়ত সারাদেশে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে চীন ও আমেরিকায় পণ্য রফতানি করছেন।

লেখক: ফিচার লেখক।

এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।