সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব

অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১১:৫৮ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ মো. আব্দুর রশীদ/ফাইল ছবি

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ মো. আব্দুর রশীদ বলেছেন, জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা এবং আগামী প্রজন্মকে যথাযথভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা শুধু স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে সম্ভব নয়। বরং সমন্বিতভাবে তা সুনির্দিষ্ট সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে করতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ৩৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে ‘যৌথ ঘোষণা’ স্বাক্ষর করা হয়েছে। এখন প্রত্যেক মন্ত্রণালয় তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ সব মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করবে। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ দিকনির্দেশনামূলক সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহ কারিগরি সমর্থন নিশ্চিত করবে।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের নিমিত্ত ‘যৌথ ঘোষণা’ বাস্তবায়ন কর্মকৌশল নির্ধারণ সম্পর্কিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এসব কথা বলেন। তথ্য অধিদপ্তরের এক তথ্য বিবরণীতে এ তথ্য জানানো হয়।

তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, খাদ্য উৎপাদন এবং ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঁচটি মন্ত্রণালয় এবং আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থাসমূহের প্রতিনিধিদের নিয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় কৃষি, খাদ্য, শিল্প, বাণিজ্য এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানরা তাদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের পরিকল্পনা এবং কর্মকৌশল নির্ধারণে করণীয় সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, ইউএনডিপি, ইউনিসেফ-এর প্রতিনিধিবৃন্দ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও এর আওতাধীন দপ্তর/সংস্থার প্রধানরা অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের কারিগরি সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন।

সভায় যেসব বিষয় অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করে আলোচনা করা হয় সেগুলো হলো-মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে স্বাক্ষরকারী সব মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ের তদারকি কমিটির মাধ্যমে ‘যৌথ ঘোষণা’ বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী ফলমূল-শাকসবজির প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ, ক্ষতিকর রাসায়নিক ও কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, তামাক থেকে বিকল্প ফসল চাষে প্রণোদনা প্রদান, কৃষক সহায়তা, বাজার ও মূল্য স্থিতিশীলতা এবং কোল্ড স্টোরেজ ও পরিবহনসহ ফসল সংরক্ষণের অবকাঠামো উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা ও ভোক্তা সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে সামনের ও পিছনের অংশে লেবেলিং (Front-of-Package Labeling - FOPL) বাধ্যতামূলক, শিশুদের জন্য অস্বাস্থ্যকর খাদ্য ও পানীয়ের বিপণন সীমিত এবং ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড (TFA) সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন।

এছাড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নিরাপদ ও পুষ্টিকর মাছ, দুধ, ডিম ও চর্বিহীন মাংস উৎপাদন ও বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা উন্নীত করা; অ্যান্টিবায়োটিক, হরমোন ও রাসায়নিক ব্যবহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে তদারকি, পরিদর্শন ও প্রয়োগ কার্যক্রম জোরদার করা; স্বল্প-লবণ সংরক্ষণ পদ্ধতি ও রপ্তানির সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য গবেষণা, উদ্ভাবন ও নীতি সহায়তা প্রদান; বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আমদানি ও রফতানি খাদ্যে পুষ্টি মানদণ্ড কার্যকর, উচ্চ চিনি, লবণ ও ট্রান্স-ফ্যাটযুক্ত পণ্য সীমিত করণ, নতুন ধরনের তামাক ও নিকোটিন পণ্য নিয়ন্ত্রণ এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য ও তামাকজাত পণ্যের ক্ষেত্রে পোর্টে স্ক্রিনিং কার্যক্রম চালু করার বিষয় নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

গত ২০ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ (যেমন হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, আঘাতজনিত অসুস্থতা ইত্যাদি) প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৩৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করে। ওই ঘোষণায় মোট পাঁচ দফা প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়।

এমইউ/এমএমকে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।