‘কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বীকৃতি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্ভাবিত কমিউনিটি ক্লিনিক সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য একটি অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি লাভ করেছে। ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ প্রস্তাবটি জাতিসংঘে গৃহীত হওয়ায় দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল অডিটোরিয়ামে কমিউনিটি ক্লিনিকের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি উদযাপনের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনে এই রেজুলেশনের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরেন। জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে রেজুলেশনের অনুমোদনকে ২০৩০ সালের মধ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা অর্জনের বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, রেজুলেশনটির সফল বাস্তবায়ন কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। স্বাধীনতার ৫২ বছরে দেশের স্বাস্থ্যখাত বিশ্বব্যাপী প্রশংসনীয় সফলতা অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: কমিউনিটি ক্লিনিক একটি জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান : প্রধানমন্ত্রী
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এই রেজুলেশনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। কারণ এটি সদস্য দেশগুলোতে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রবর্তন ও বাস্তবায়নে কাজ করবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, বাংলাদেশের সব মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। যা সারাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার সুফল সরবরাহে বিপ্লব ঘটিয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনস্বরূপ জাতিসংঘের ৭০টি দেশ এই প্রস্তাবে কো-স্পনসর করেছে। মিশনগুলো গত কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্য কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় রেজুল্যুশনটি এই বছরের শুরুর দিকে মিশন সদস্য রাষ্ট্রের বিবেচনার জন্য প্রস্তাব করে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে গৃহীত হলো শেখ হাসিনার কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্যোগ
আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদন ড. আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বৈশ্বিক স্বীকৃতি পেয়েছে। দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য উদ্ভাবন বলে ভাবা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৬ মে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে কমিউনিটি ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এ প্রস্তাবটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিতে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ভাবনী নেতৃত্বের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ কর্তৃক উত্থাপিত প্রস্তাবে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের স্বীকৃতি দিয়েছে। প্রস্তাবটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উত্থাপন করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
এএএম/জেডএইচ/এএসএম