বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:১৭ পিএম, ১৭ জুলাই ২০২৩

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সোমবার (১৭ জুলাই) বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে কমপক্ষে ২৫ জন চিকিৎসক এ ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রমে অংশ নেন। কিডনি গ্রহীতা হলেন পিরোজপুরের বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সী সুজন রায়। আর কিডনি দাতা হলেন ৩১ বছর বয়সী তারই ছোটভাই সুসেন রায়।

এসময় বিএসএমএমইউয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালকে স্বাস্থ্যখাতের পদ্মা সেতু উল্লেখ করে অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্যানসার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্টসহ এ ধরনের চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কম খরচে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। দেশের অর্থ বিদেশে গিয়ে ব্যয় করে চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। বিএসএমএমইউতে নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশের চিকিৎসকরা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য অধ্যয়ন করছে। আশা করি, এসব দেশের রোগীরাও বাংলাদেশে চিকিৎসাসেবা নেবেন।

আরও পড়ুন>> ভাতা বৃদ্ধি প্রত্যাখ্যান করে আবারো অবস্থান কর্মসূচি

তিনি বলেন, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে রয়েছে বিশ্বমানের ৫টি সেন্টার। রয়েছে দেশের সেরা অপারেশন থিয়েটার। এ হাসপাতালের প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের পর দেশের চিকিৎসাসেবা বিশেষ করে সর্বাধুনিক উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। কয়েক শত কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের রোগীদের যাতে বিদেশে যেতে না হয় এবং দেশেই সর্বাধুনিক চিকিৎসা পায় সেই লক্ষ্যে ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। পরে এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগী দেখা শুরু করেন। এ পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার রোগী সেবা নিয়েছেন। ল্যাবরেটরি টেস্ট, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, ইটিটি, ইকোসহ মোট ৪০ হাজারেরও অধিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ৫ জুলাই অন্তঃবিভাগের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ১২২ জন রোগী সেবা নিয়েছেন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯৫ জন। এসময়ে ১৬ জন রোগীকে অপারেশন সেবা দেওয়া হয়েছে।

উপাচার্য আরও বলেন, অর্গান ট্রান্সপ্ল্যান্টকে বেগবান করতে ক্যাডভারেকি ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। ব্রেনডেথ একজন রোগীর কিডনি, কর্নিয়াসহ বিভিন্ন অঙ্গদানের মাধ্যমে ৮ জন রোগীর ট্রান্সপ্ল্যান্ট করে তাদের নতুন জীবনদান করা সম্ভব। আর এজন্য ক্যাডভারেকি ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রমকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, এরই মধ্যে সম্পন্ন হওয়া লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের রোগী ও লিভার দাতা এবং ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্টের মাধ্যমে যে দুজন রোগীর কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট এবং দুজন কর্নিায়ার সমস্যায় ভোগা রোগীর কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল, তারা সবাই সুস্থ আছেন।

আরও পড়ুন>> ভাতা বাড়ানোর দাবির সঙ্গে একমত, তবে সময় দিতে হবে

রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত ছয় শতাধিক রোগীর ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ৮ জন ভর্তি রোগীসহ আরও ৩০ জন রোগীর কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার অপেক্ষায় রয়েছেন। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে রয়েছে দেশের সবচাইতে আধুনিক ইউনিক অপারেশন থিয়েটার যা বাংলাদেশের আর কোথাও নেই এবং এখানে সপ্তাহের ছয়দিনই ট্রান্সপ্ল্যান্ট সংক্রান্ত ওটি কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, নার্সিং অনুষদের ডিন ও অ্যানেসথেশিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, কিডনি (নেফ্রোলজি) বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, ইউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. ইসতিয়াক আহম্মেদ শামীম, পরিচালক (সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. আব্দুল্লাহ আল হারুন প্রমুখসহ সংশ্লিষ্ট বিভিাগের চিকিৎসক ও নার্সরা উপস্থিত ছিলেন।

এএএম/ইএ

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।