সিএনএনের প্রতিবেদন

ট্রাম্পকে সমর্থনকারী ব্যবসায়ীরাও এখন সুর পাল্টাচ্ছেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:১৬ পিএম, ০৮ এপ্রিল ২০২৫
ছবি: এএফপি (ফাইল)

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্কারোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা নিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বড় পতন দেখা গেছে, শেয়ারবাজারে। আশঙ্কা বাড়ছে অর্থনৈতিক মন্দার। যা থেকে রেইয়া পাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্রও। বিশেষ করে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পকে সমর্থনকারী মার্কিন ধনকুবেররাও এখন এই পদক্ষেপের বিপক্ষে ঝুঁকছেন।

ট্রাম্পের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রতি সমর্থনকারী বিলিয়নিয়ার বিনিয়োগকারী বিল অ্যাকম্যান সতর্ক করে বলেছেন, নতুন শুল্ক আরোপ অর্থনৈতিকভাবে পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু করার সমতুল্য।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে করা একটি পোস্টে অ্যাকম্যান বলেছেন, নতুন শুল্ক কার্যকর হলে ব্যবসায়িক বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাবে। ভোক্তারা তাদের ব্যয় বন্ধ করবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যা পুনরুদ্ধার করতে বছরের পর বছর এমনকি দশক পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।

পার্শিং স্কয়ার ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের এই সিইও বলেন, ট্রাম্প যদি নিজের অবস্থান পরিবর্তন না করেন, তাহলে আমরা একটি স্ব-প্রণোদিত অর্থনৈতিক দুর্যোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই আমাদের এখনই নিরাপদ স্থান খোঁজা উচিত।

একটি অর্থনৈতিক পরমাণু যুদ্ধের মাঝখানে কোনো সিইও ও কোনো পরিচালনা পরিষদ আমাদের দেশে বড়, দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতি দিতে কি স্বস্তিবোধ করবেন? প্রেসিডেন্ট বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়িক নেতাদের আস্থা হারাতে শুরু করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে অন্যান্য বিলিনিয়ার ও ধনী ব্যবসায়ী নেতারাও ট্রাম্পের শুল্ক নীতির প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন।

জেপি মরগান চেজের সিইও জেমি ডিমন সোমবার সতর্ক করে বলেছেন, শুল্কের ফলে মূল্য বৃদ্ধি পাবে। বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার দিকে যাবে ও বিশ্বে আমেরিকার অবস্থান দুর্বল হবে।

শেয়ারহোল্ডারদের উদ্দেশ্যে লেখা এক বার্ষিক চিঠিতে ডিমন বলেন, সাম্প্রতিক শুল্কের ফলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে এবং অনেকেই মন্দার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছেন। তবে শুল্কই মন্দার কারণ কিনা তা এখনও প্রশ্নবিদ্ধ, তবে এটি প্রবৃদ্ধিকে ধীর করে দেবে।

বিনিয়োগ সংস্থা ডুকেসনে ফ্যামিলি অফিসের প্রতিষ্ঠাতা বিলিয়নিয়ার স্ট্যানলি ড্রুকেনমিলার বলেছেন, তিনি ১০ শতাংশের বেশি শুল্ক সমর্থন করেন না।

ফিশার ইনভেস্টমেন্টসের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান বিলিয়নিয়ার কেন ফিশার বলেছেন, ট্রাম্প গত বুধবার যা প্রকাশ করেছেন সেটা বোকামি, ভুল, চরম উদ্ধত, ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতাকে অবজ্ঞা করা এবং সমস্যাই নয়-এমন একটি বিষয়কে ভুল যন্ত্র দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা। আমার অভিজ্ঞতা বলছে, এটা ব্যর্থ হবে এবং সমস্যা যতটা তার চেয়ে আতঙ্ক বেশি এবং এখান থেকে এটা অতিরঞ্জিত।

ফিশার উল্লেখ করেছেন যে তিনি সাধারণত প্রেসিডেন্টের পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেন না, কিন্তু শুল্কের বিষয়ে ট্রাম্প অনেক দূর এগিয়ে গেছেন।

বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ও ট্রাম্পের শীর্ষ সহযোগী ইলন মাস্কও বলেছেন, তিনি ইউরোপ ও আমেরিকার মধ্যে শূন্য শুল্ক নীতির আশা করেন। ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে ইতালির উপ-প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক বলেছেন, তিনি ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার মধ্যে একটি কার্যকর মুক্ত-বাণিজ্য অঞ্চল তৈরি দেখতে চান।

পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের ডেপুটি চিফ গ্লোবাল ইকোনমিস্ট সাইমন ম্যাকঅ্যাডাম বলেছেন, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির অনিশ্চয়তার কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে পারে।

সূত্র: সিএনএন

এমএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।