ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় ৬৮ আফ্রিকান অভিবাসনপ্রত্যাশী নিহত
হুথি-নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় অন্তত ৬৮ জন আফ্রিকান অভিবাসনপ্রত্যাশী নিহত হয়েছেন। সোমবার (২৮ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রিত টিভি চ্যানেল আল মাসিরাহ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সা’দা প্রদেশের একটি আটক কেন্দ্র রোববার রাতে হামলার শিকার হলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রটিতে ১১৫ জন আফ্রিকান অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৪৭ জন, যাদের অধিকাংশের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুন>>
- ইয়েমেনে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
- ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত বেড়ে ৮০
- ৭২ ঘণ্টায় চার মার্কিন জাহাজে হুথিদের হামলা
মার্কিন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এর কয়েক ঘণ্টা আগে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানায়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১৫ মার্চের নির্দেশের পর হুথিদের বিরুদ্ধে চালানো অভিযানে তাদের বাহিনী ৮০০-র বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় ‘শত শত হুথি যোদ্ধা ও ডজনাধিক হুথি নেতা’, বিশেষ করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন কর্মসূচির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা নিহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছে সেন্টকম।
অন্যদিকে হুথি-চালিত কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব হামলায় বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হলেও গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে তুলনামূলক কম প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
আফ্রিকান অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আটক কেন্দ্রটি ধ্বংসের খবর সামনে আসার পর ইয়েমেনে চলমান মানবিক সংকট নতুন করে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ১১ বছর ধরে চলা সংঘাত সত্ত্বেও ‘হর্ন অব আফ্রিকা’ অঞ্চল থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইয়েমেনে আগমন থেমে নেই। তারা নৌকায় করে সাগর পাড়ি দিয়ে প্রথমে ইয়েমেনে, এরপর সৌদি আরবে পৌঁছানোর চেষ্টা করে।
কিন্তু বহু অভিবাসনপ্রত্যাশী শোষণ, নির্যাতন ও সংঘাতপূর্ণ এলাকায় বিপজ্জনক যাত্রার শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।
আইওএমের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে প্রায় ৬০ হাজার ৯০০ অভিবাসনপ্রত্যাশী ইয়েমেনে পৌঁছেছেন, যাদের অনেকেরই বেঁচে থাকার কোনো উপায় ছিল না।
এর আগে, চলতি মাসের শুরুতে হুথি-নিয়ন্ত্রিত সরকার জানিয়েছিল, লোহিত সাগর উপকূলের রাস ইসা তেল টার্মিনালে মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ৭৪ জন নিহত ও ১৭১ জন আহত হয়েছেন। তারা দাবি করে, এটি একটি বেসামরিক স্থাপনা ছিল এবং এ হামলা ‘যুদ্ধাপরাধ’।
সূত্র: বিবিসি
কেএএ/