ফেক নিউজ শনাক্তে পেশাদার সংস্থা নিয়োগ দিচ্ছে মোদি সরকার
পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ছড়ানো ভুয়া সংবাদ (ফেক নিউজ) খুঁজে বের করবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এরকম সংস্থা নিয়োগের জন্য সরকার ইতোমধ্যে টেন্ডার দিয়েছে। খবর জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে।
ফেক নিউজ খুঁজে বের করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর (পিআইবি) একটা বিশেষ সেল আছে। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা ‘প্রসার ভারতী’ নিয়মিত এ কাজ করে। তবে তাতেও হচ্ছে না। এবার পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ফেক নিউজ খুঁজে বের করবে মোদি সরকার।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সংস্থা ব্রডকাস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালটেন্টস ইন্ডিয়া এর জন্য টেন্ডার ডেকেছে। সেই পেশাদার সংস্থার কাজ হবে, তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফেক নিউজ খুঁজে বের করা এবং কারা সেই সেগুলো দিচ্ছে কিংবা ছড়াচ্ছে তা দেখা। এছাড়া কোন দেশ থেকে এটা করা হচ্ছে সেটাও খুঁজতে হবে।
তথ্য ও সম্প্রচার বিভাগের এক কর্মকর্তা ডয়চে ভেলেকে জানান, মিথ্য়া খবর এখন সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংবাদপত্র ও টিভিতে ফেক নিউজ দেয়া হলে তা ধরে ফেলা সহজ। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে ফেক নিউজের এতটাই রমরমা যে সরকার তা নিয়ে বেশ চিন্তিত। এছাড়া সেই ফেক নিউজ ধরাও কঠিন।
তিনি আরও বলেন, তাদের (মোদি সরকারের) চিন্তা আরও বেড়েছে এই কারণে যে, সাধারণ মানুষজন ফেক নিউজ আগাগোড়া বিশ্বাস করছেন। আর এ কারণেই সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমগুলোকে ফেক নিউজ বা ভুয়া সংবাদ মুক্ত করার চেষ্টা চলছে।
তবে ফেক নিউজ কাকে বলা হবে, সে সম্পর্কে কোনো মাপকাঠি নেই। ফলে সরকারবিরোধী খবর পাওয়া গেলেই তা ফেক নিউজ বলে চালিয়ে দেওয়ার এক ধরনের প্রবণতা তৈরি হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষক ও সমালোচকরা।
এ ছাড়া মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ উঠেছে যে, তার সরকার সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্য়মকে নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি রাখতে চায়। সেক্ষেত্রে এই ফেক নিউজ খুঁজে বের করার চেষ্টাও কি সেই নজরদারির ভিন্ন রুপ কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছ।
প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র বলেন, ‘এটা ঠিক যে ফেক নিউজ একটা বড় সমস্যা। তা ধরা গেলে খুব ভালো। তবে অস্বীকার করা যাবে না যে, রাজনীতিতে ফেক নিউজ চালু হওয়ার পেছনে বিজেপি (ভারতের ক্ষমতাসীন দল) অবদান প্রচুর।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা সত্যিই যদি সামাজিক মাধ্যমকে ফেক নিউজ মুক্ত করতে চায় তাহলে তো ভালো। কিন্তু মনে হচ্ছে, বিষয়টা নাগালের বাইরে চলে গেছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে ফেক নিউজ হচ্ছে। তা ধরার কাজটা বেশ কঠিন।’
এসএ