১০২ দিন পর করোনা ফিরল নিউজিল্যান্ডে, আতঙ্কে কেনাকাটার হিড়িক
দীর্ঘ ১০২ দিন নভেল করোনাভাইরাসমুক্ত থাকার পর নিউজিল্যান্ডে আবারও এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় দেশটির বৃহত্তম শহর অকল্যান্ড লকডাউন করা হয়েছে। দীর্ঘ তিন মাসের বেশি সময় পর মঙ্গলবার প্রথম স্থানীয় সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার এই খবর গণমাধ্যমে আসায় দেশটির বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে খাবার ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য-সামগ্রী কিনতে সুপারমার্কেটে হুমড়ি খেয়েছে পড়েছেন।
করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় নিউজিল্যান্ডের সফলতা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে করোনার তাণ্ডব চললেও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ৫০ লাখ জনগোষ্ঠীর এই দেশটি থেকে সব ধরনের বিধি-নিষেধ তুলে নেয়া হয়েছিল তিন মাস আগে।
কিন্তু এই সফলতায় আপাতত বিরতি দিয়ে দেশটিতে করোনার প্রথম স্থানীয় সংক্রমণ ধরা পড়েছে মঙ্গলবার। দেশটির স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অ্যাশলে ব্লুমফিল্প বলেছেন, অকল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের এক পরিবারের চারজন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের একজনের বয়স ৫০ বছর। নতুন আক্রান্তদের বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস নেই।
তিনি বলেন, ওই পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও করোনা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া তাদের সংস্পর্শে আসা অন্যান্যদের শনাক্ত করার কাজ চলমান রয়েছে।
এদিকে, দেশটিতে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর লোকজনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আতঙ্কিত লোকজন খাবার ও নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্য-সামগ্রী কেনার জন্য সুপারমার্কেট এবং অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।
কিউই প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন বলেছেন, পূর্ব-সতর্কতা হিসেবে বুধবার সকাল থেকে অকল্যান্ডে তৃতীয় ধাপের বিধি-নিষেধ কার্যকর হবে। এই সতর্কতার আওতায় দেশটির বাসিন্দারা কর্মক্ষেত্র, স্কুল, জনসমাগম থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়া ১০ জনের বেশি একত্রিত হতে পারবেন না।
আগামী শুক্রবার পর্যন্ত এই বিধি-নিষেধ কার্যকর থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে পরিস্থিতির যথাযথ মূল্যায়ন, তথ্য সংগ্রহ এবং ব্যাপক কন্টাক্ট ট্রেসিং করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর দেশটির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনা সংক্রমণ ফিরে আসায় সেবিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন জেসিন্ডা।
নিউজিল্যান্ডের এই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বুধবার থেকে নিউজিল্যান্ডের অন্যান্য অংশে তিনদিনের জন্য দ্বিতীয় মাত্রার সতর্কতা চালু হবে। এর আওতায় সারা দেশেই পুনরায় সামাজিক দূরত্বের বিধি-নিষেধ কার্যকর হবে।
দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী পাওয়া যায় গত ফেব্রুয়ারিতে। তখন থেকে এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডে মাত্র এক হাজার ২১৯ জনের দেহে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে সর্বশেষ কমিউনিটি ট্রান্সমিশন রেকর্ড করা হয়েছিল গত ১ মে। নতুন করে চারজন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় মোট সংখ্যা এক হাজার ২২৩ জনে পৌঁছেছে।
সূত্র: রয়টার্স।
এসআইএস/এমএস