ফের করোনার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, মৃত্যুতে রেকর্ড
অডিও শুনুন
প্রথমদিকে করোনাভাইরাস মহামারিকে হেলাফেলা করার পরিণাম বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে বিশ্বে করোনায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত-মৃত্যুর রেকর্ড তাদের। অর্থনীতিতেও লেগেছে জোর ধাক্কা। মাঝে সংক্রমণের হার কিছুটা কমলেও দেশটিতে গত কয়েক সপ্তাহে আবারও হু হু করে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যুও।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসজনিত কারণে মারা গেছেন অন্তত ২ হাজার ৯৫৭ জন, যা গত ১৫ এপ্রিল থেকে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। গোটা মহামারির মধ্যে দেশটিতে একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ডও এটাই।
সবশেষ তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রে এপর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ কোটি ৩৯ লাখ ১৫ হাজার ২৮৬ জন। মারা গেছেন ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩০০ জন।
কোভিড ট্র্যাকিং প্রজেক্টের হিসাবে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। বুধবার দেশটিতে এক লাখেরও বেশি রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন গড়ে ১ লাখ ৬১ হাজার ৪৪৮ জন, যা গত জুলাইয়ের চেয়ে প্রায় আড়াইগুণ বেশি।
গত গ্রীষ্মে করোনাজনিত কারণে দৈনিক গড়ে ১ হাজার ১৩০টি মৃত্যু দেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহে সেই সংখ্যা দেড় হাজার পার হয়ে গেছে।
আগামী দিনগুলোতে এই পরস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় দৈনিক প্রাণহানির সংখ্যা গড়ে দুই থেকে তিন হাজার হতে পারে। এমনকি তা চার হাজারের কাছাকাছিও চলে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিনের মেডিসিন বিভাগের সংক্রামক রোগ শাখার প্রধান ডা. ডেভিড আন্দেস জানান, তাদের হাসপাতালে ইতোমধ্যেই রোগী ধারণক্ষমতার ৯৮ শতাংশ পূরণ হয়ে গেছে। তার কথায়, ‘সংখ্যাগুলো আমাদের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে।’
এ চিকিৎসক জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নতুন রোগীদের স্থান সঙ্কুলানে হিমশিম খাচ্ছে। অনেক রোগীকেই শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বহু চিকিৎসককে মাত্রাতিরিক্তি ডিউটি করতে হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা ডা. রবার্ট রেডফিল্ড বলেছেন, আগামী কয়েক মাস দেশটির হাসপাতালগুলোতে রোগীর বাড়তি চাপ থাকতে পারে। তার কথায়, ‘ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি কঠিন সময় যাবে। আমি বিশ্বাস করি, দেশের জনস্বাস্থ্য খাতের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ সময় হতে যাচ্ছে সেটি।’
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
কেএএ/পিআর