ভারতে মৃত্যুপথযাত্রী দাদার জন্য অক্সিজেন চাওয়ায় যুবকের নামে মামলা
মৃত্যুপথযাত্রী দাদাকে বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন চেয়ে টুইট করেছিলেন এক ভারতীয় যুবক। এ কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে উত্তর প্রদেশ সরকার। তাদের অভিযোগ, ওই যুবক রাজ্যে অক্সিজেন সংকটের মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে মানুষজনকে আতঙ্কিত করেছেন।
বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শশাঙ্ক যাদব নামে ওই যুবকের কারাদণ্ড হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ভারতে করোনায় সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী রাজ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম উত্তর প্রদেশ। সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে করোনা সংকটের ভয়াবহতাকে হেলাফেলা করার অভিযোগ রয়েছে।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এ নেতা সম্প্রতি দাবি করেছেন, কেউ গুজব অথবা প্রোপাগান্ডা ছড়ালে তাদের সম্পত্তি যেন বাজেয়াপ্ত করা হয়।
আদিত্যনাথ আরও দাবি করেছেন, তার রাজ্যে হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের কোনও সংকট নেই। যদিও বিভিন্ন খবরে এর ভিন্ন চিত্রই দেখা যাচ্ছে।
উত্তর প্রদেশের আমেথি শহরের কর্মকর্তারা বলছেন, শশাঙ্কের ‘ভুয়া টুইট’-এর কারণে অন্য লোকজন সরকারবিরোধী অভিযোগ তুলতে প্রলুব্ধ হয়েছে। এ কারণে গত মঙ্গলবার রাতে মামলা দায়ের হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অর্পিত কাপুর নামে আমেথির এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, শশাঙ্ক যাদবের বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত সোমবার ২৬ বছর বয়সী এ যুবক তার মৃত্যুপথযাত্রী দাদার জন্য অক্সিজেন চেয়ে একটি টুইট করেন। এতে তিনি বলিউড অভিনেতা সোনু সুদকে ট্যাগ করেছিলেন। তবে টুইটে শশাঙ্ক কোথাও করোনাভাইরাসের কথা উল্লেখ করেননি।
টুইটটি তার এক বন্ধু রিটুইট করেন এবং তিনি এক সাংবাদিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওই সাংবাদিক শশাঙ্কের পরিস্থিতি আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেন।
আমেথির সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে ট্যাগ করা হয় টুইটে। তিনি এর জবাবও দেন। কিন্তু ভারতীয় এ মন্ত্রী জানান, তিনি শশাঙ্কের ফোন নাম্বারে কয়েকবার কল দিয়েও কোনও সাড়া পাননি। তবে বিষয়টি স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, গত সোমবার রাতে মারা গেছেন শশাঙ্কের দাদা। তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে হার্ট অ্যাটাকের কথা বলা হচ্ছে। তিনি করোনায় আক্রান্ত না হলেও ঠিক কী পরিস্থিতিতে মারা গেছেন, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
ভারতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে নিয়ে বেশ সমালোচনার মুখে রয়েছে মোদি সরকার। চলতি সপ্তাহেই তারা সরকারের সমালোচনা করা পোস্টগুলো মুছে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছে টুইটারকে। এমন সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
সূত্র: বিবিসি
কেএএ/এমকেএইচ