নড়াইলে জিরার চাষ দেখতে মানুষের ভিড়
নড়াইল সদরের মুলিয়া ইউনিয়নের নুনক্ষির গ্রামের প্রদ্যূৎ বিশ্বাস, দিলিপ রায় ও লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কৃষকরা এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে জিরার আবাদ শুরু করেছেন। নুনক্ষির ও মধুমতি নদীর চরে এই জিরার আবাদ দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন।
এছাড়াও শালনগর ইউনিয়নের চরশামুকখোলা গ্রামের কৃষক যাদু আলী, রামকান্তপুর গ্রামের কৃষক ওসমান মুন্সীসহ ১২ জন কৃষক এবার জিরার আবাদ শুরু করেছেন।
রামকান্তপুর গ্রামের কৃষক উসমান মুন্সী জানান, তিনি পাঁচশত টাকা দিয়ে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙা উপজেলার রুদ্রবানা গ্রামের শামসুর রহমানের বাড়ি থেকে ১০০ গ্রাম জিরা কিনে ৭ শতাংশ জমিতে আবাদ করেছেন। বর্তমানে গাছে ফুল শেষে জিরা আসতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, যার কাছ থেকে বীজ কিনেছেন তিনি মাত্র পাঁচ শতাংশ জমিতে আবাদ করে ১ মনের মত ফলন পেয়েছিলেন। কোনো দূর্যোগ দেখা না দিলে এক মনের বেশি জিরা পাওয়া যাবে। ১০০ গ্রাম জিরা যদি ১০ শতাংশ জমিতে আবাদ করা যেত তাহলে ভাল হতো।
সরেজমিন দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ জিরার চাষ দেখতে প্রতিদিন মধুমতির চড়ে ভিড় করছেন। প্রতিটি জিরার গাছ লম্বা হয়েছে প্রায় ৪ থেকে ৫ ফুট। ইতোমধ্যে বেশ কিছু গাছ বাতাসে হেলে পড়েছে। হেলে পড়া গাছগুলো সুতা দিয়ে বেধে সোজা রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। দেখতে আসা কৃষকরা চাষী ওসমান মুন্সিসহ অন্যদের কাছে জিরা চাষের পদ্ধতি জেনে নিচ্ছেন।
মাগুরা জেলার মহাম্মোদপুর উপজেলার মহাম্মোদপুর গ্রামের কৃষক রোস্তম আলী, ছলেমান শেখ ও আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানে জিরা চাষের খবর পেয়ে দেখতে এসেছি। আমাদেরও ইচ্ছা আছে জিরা চাষ করার। কেমন করে কিভাবে চাষ করতে হয় সে বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। আগামী বছর আমরাও আমাদের এলাকায় জিরা চাষ করবো।
লোহাগড়া উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমান জানান, এলাকায় জিরা চাষের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে। এ বছর এলাকায় প্রায় ২০/২৫ শতাংশ জমিতে জিরার আবাদ হয়েছে। কৃষকরা জিরা চাষে উদ্বুদ্ধ হলে এ এলাকার দরিদ্র কৃষকদের ভাগ্যের দ্বার খুলে যাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শেখ আমিনুল হক বলেন, জেলায় পরীক্ষামূলক জিরার আবাদ শুরু হয়েছে। আমরা ভবিষ্যতে কৃষকদের জিরা চাষের উপর প্রশিক্ষণ দিব। যেহেতু নড়াইলের মাটি উর্বর সেহেতু কৃষকরা লাভবান হবেন।
হাফিজুল নিলু/এফএ/এমএস