ক্যানেরি দ্বীপে তিন শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশী বহনকারী ৩ নৌকা নিখোঁজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৩৬ এএম, ১০ জুলাই ২০২৩
ছবি সংগৃহীত

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী তিনটি নৌকা নিখোঁজ হয়েছে। এসব নৌকায় তিন শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০০ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে বহনকারী একটি নৌকা ক্যানেরি দ্বীপপুঞ্জে নিখোঁজ হয়েছে। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ওই নৌকাটি ক্যানেরি দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। আফ্রিকার দেশ সেনেগালের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী ওই নৌকার সন্ধানে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে স্পেনের উদ্ধার কর্মীরা। খবর বিবিসির।

একই সময়ে আরও দুটি নৌকা নিখোঁজ হয়েছে বলে জানা গেছে। ওই দুই নৌকাতেও আরও শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। দাতব্য সংস্থা ওয়াকিং বর্ডার জানিয়েছে, সেনেগালের উপকূলীয় শহর কাফোন্তিন থেকে একটি মাছ ধরার নৌকায় করে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা যাত্রা শুরু করে। ওই নৌকায় অনেক শিশুও রয়েছে।

আরও পড়ুন: কানাডায় ভারতীয় দূতাবাসের সামনে খালিস্তানপন্থিদের বিক্ষোভ

নৌকাগুলো গত ২৭ জুন ক্যানেরি দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা করার পর থেকে আর সেগুলোর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।স্পেনের সমুদ্রে উদ্ধারকারী সংস্থা জানিয়েছে, উদ্ধার অভিযানে একটি বিমানও অংশ নিয়েছে। তবে নিখোঁজ হওয়া অন্য দুটি নৌকা সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য জানা যায়নি। ওয়াকিং বর্ডারের কর্মকর্তা হেলেনা মালেনোকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, অন্য নৌকাগুলোর একটিতে ৬৫ জন যাত্রী ছিল, আরেকটিতে ৬০ জন ছিল বলে জানা গেছে। ফলে নিখোঁজ হওয়া ওই তিনটি নৌকায় তিনশোর বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভূমধ্যসাগরের গ্রীক উপকূলের কাছে জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার ডুবে যাওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ফেরও এই নিখোঁজের ঘটনা ঘটলো। ওই ঘটনায় অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছিল। জাতিসংঘ বলেছে, ওই নৌকার অন্তত ৫০০ যাত্রী এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

আফ্রিকার যেসব পথ দিয়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করেন, তার মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক নৌপথের অন্যতম এই ক্যানেরি দ্বীপে যাওয়ার চেষ্টা। শুধুমাত্র হালকা মাছ ধরার নৌকায় করে যাত্রা করার কারণেই নয় বরং শক্তিশালী আটলান্টিক স্রোতও সেখানে বিপদ ঘটাতে পারে।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সাগর পাড়ি দিয়ে স্প্যানিশ দ্বীপে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে গিয়ে অন্তত ৫৫৯ জন মানুষ নিহত হয়। এর আগে ২০২১ সালে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল এক হাজার ১২৬।

স্পেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে আইওএম জানিয়েছে, ২০২২ সালে অবৈধভাবে ১৫ হাজার ৬৮২ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী স্পেনে এসেছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ কম।

তবে আইওএম বলছে, তুলনামূলকভাবে কমছে বলে মনে হলেও, ২০২০ সালের আগে যত অভিবাসনপ্রত্যাশী এই বিপজ্জনক পথে সাগর পাড়ি দিয়ে আসতেন, তার চেয়ে এখন অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আসার হার অনেক বেশি।

জুনের মাঝামাঝি সময়ে গ্রিসে ভয়াবহ ওই নৌকাডুবির পর দেশটির অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ইয়োরগোস মিশাইলিদিস বিবিসিকে বলেন, গ্রিস বরাবরই ইইউকে বলে আসছে একটি ‘কঠোর অভিবাসন নীতি’ প্রণয়ন করতে হবে। যাদের সত্যিকার অর্থে অভিবাসন প্রয়োজন তাদের গ্রহণ করতে হবে। শুধুমাত্র অর্থ আছে এমন লোকদের নয়, যারা পাচারকারীদের অর্থ দিয়ে অভিবাসী হতে চায়।

আরও পড়ুন>ফ্রান্সে এবারের বাস্তিল দিবসে আতশবাজি নিষিদ্ধ

তিনি বলেন, এখন এমন অবস্থা যে পাচারকারীরাই সিদ্ধান্ত নেয় কারা ইউরোপে আসবে। যাদের সত্যি প্রয়োজন তাদের জন্য আশ্রয়, সহায়তা এবং নিরাত্তা প্রদান করা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাজ। এটা শুধু ইতালি, গ্রিস বা সাইপ্রাসের সমস্যা নয়। এটা নিয়ে ইইউকে ভাবতে হবে। একটা শক্ত অভিবাসন নীতি তাদের অবশ্যই প্রণয়ন করতে হবে।

বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া এবং আফ্রিকা থেকে শরণার্থী ও অভিবাসীদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশের অন্যতম প্রধান পথ গ্রিস। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত ৭০ হাজারেরও বেশি শরণার্থী ও অভিবাসী ইউরোপের প্রথম সারির দেশগুলোতে প্রবেশ করেছে, যাদের বেশিরভাগই প্রথমে ইতালিতে গেছেন।

টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।