উত্তেজনার মধ্যেই আজারবাইজান সফরে এরদোয়ান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৩৫ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

গত সপ্তাহে বিচ্ছিন্ন নাগর্নো-কারাবাখের নিয়ন্ত্রন নেয় আজারবাইজান। এরপর ওই এলাকা থেকে হাজার হাজার জাতিগত আর্মেনিয়ান সেখান থেকে পালিয়ে গেছেন। এমন উত্তেজনার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের আমন্ত্রণে আজারবাইজাইন সফরে গেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।

তুর্কি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, কারাবাখ অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে মিত্র আলিয়েভের সঙ্গে আলোচনা করতে আজারবাইজানের স্বায়ত্তশাসিত নাখচিভান এক্সক্লেভে একদিনের সফরে রয়েছেন এরদোয়ান। নাখচিভান এক্সক্লেভ হচ্ছে আর্মেনিয়া, ইরান ও তুরস্কের মধ্যে অবস্থিত আজারি ভূখণ্ডের একটি ক্ষুদ্র অংশ।

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এ সফরে এরদোয়ান আজারি প্রেসিডেন্ট আলিয়েভের সঙ্গে একটি বৈঠক ও সংবাদ সম্মেলন করবেন। তাছাড়া একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।

গত সপ্তাহে বিরোধপূর্ণ এ অঞ্চলে সামরিক অভিযান চালায় আজারবাইজান। তার ২৪ ঘণ্টার মাথায় রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় আর্মেনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। ফলে অঞ্চলটি এখন পুরোপুরি আজারবাইজানের নিয়ন্ত্রণে। এমন অবস্থায় বাধ্য হয়ে আতঙ্কে ওই এলাকা ছাড়ছে হাজার হাজার আর্মেনীয়।

পুরো পরিস্থিতি এখনো ঘোলাটে। কারণ আগেও আজারি বাহিনীর সঙ্গে নাগোর্নো-কারাবাখের সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তুমুল লড়াইয়ের ঘটনা ঘটেছে। তখন এভাবে সমঝোতায় না পৌঁছালেও এবার অস্ত্র ও গোলাবারুদ আজারি বাহিনীর হাতে জমা দিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। বিষয়টির মধ্যস্থতা করেছে মস্কো।

ফলে অঞ্চলটিতে যুগ যুগ ধরে বসবাসরত জাতিগত আর্মেনীয়রা পালিয়ে নিজেদের মূল ভূখণ্ডে ঢুকছে। এতে নতুন করে শরণার্থীর ঢল সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এমন বাস্তবতায় করণীয় নিয়ে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) আজারি প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা জানান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তবে বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি আঙ্কারা।

দুই প্রতিবেশী আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া নাগোর্নো-কারাবাখ নিয়ে দুটি যুদ্ধ হয়েছে। প্রথম যুদ্ধ হয় ১৯৯০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর। এরপর ২০২০ সালে আবার যুদ্ধে লিপ্ত হয় দেশ দুটি।

গত বছর ডিসেম্বর থেকে আজারবাইজান আর্মেনিয়া থেকে কারাবাখ যাওয়ার একমাত্র পথ অবরোধ করে দিলে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। গত মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নাগোর্নো-কারাবাখে আজারবাইজানের সেনা অভিযানের ২৪ ঘণ্টার মাথায় আত্মসমর্পণ করে আর্মেনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। চুক্তি অনুযায়ী অস্ত্র জমা দেওয়া শুরু করে তারা।

কারাবাখে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার জাতিগত আর্মেনীয় বসাবাস করে। তাদেরই এক নেতা রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রয়টার্সকে জানান, এমন উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে তারা আজারবাইজানের অংশ হয়ে থাকতে চায় না। লোকজনের মধ্যে নিপীড়ন ও জাতিগত নিধনের শঙ্কা কাজ করছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা গেছে, সোমবার ভোর ৫টা পর্যন্ত নাগোর্নো-কারাবাখ ছেড়ে প্রায় ৩ হাজার মানুষ আর্মেনিয়ায় প্রবেশ করেছে। আর্মেনীয় সরকার বলছে, তারা হাজার হাজার শরণার্থীর চাপ নিতে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।

 

সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।