জাতিসংঘের রিপোর্ট

আফগানিস্তানকে টপকে বিশ্বের শীর্ষ আফিম উৎপাদক এখন মিয়ানমার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৮ পিএম, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩
ফাইল ছবি

তালেবানের কড়াকড়িতে আফগানিস্তানে আফিম উৎপাদন যখন কমছে, তখন বিপরীত চিত্র জান্তাশাসিত মিয়ানমারে। সংঘাত-সহিংসতার মধ্যে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে হু হু করে বাড়ছে হেরোইন তৈরির মূল উপকরণ আফিমের উৎপাদন। এরই মধ্যে আফগানিস্তানকে পেছনে ফেলে বিশ্বের বৃহত্তম আফিম উৎপাদনকারী দেশ হয়ে উঠেছে মিয়ানমার।

জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক দপ্তরের (ইউএনওডিসি) সবশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালে মিয়ানমারে আনুমানিক ১ হাজার ৮০ মেট্রিক টন আফিম উৎপাদন হয়েছে।

আরও পড়ুন>> তালেবানের কড়াকড়িতে আফগানিস্তানে আফিম উৎপাদন কমেছে ৯৫ শতাংশ

বিপরীতে, আফগানিস্তানে এ বছর আফিম উৎপাদন মাত্র ৩৩০ টনে দাঁড়িয়েছে, যা আগের তুলনায় প্রায় ৯৫ শতাংশ কম। গত বছরের এপ্রিলে তালেবান পপি চাষে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকেই দেশটিতে আফিম চাষ কমছে।

মিয়ানমার, লাওস এবং থাইল্যান্ডের মধ্যকার সীমান্ত অঞ্চলটি ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল’ নামে পরিচিত। এটি অবৈধ মাদক উৎপাদন ও পাচারের জন্য কুখ্যাত; বিশেষ করে, আফিম ও মেটামফেটামাইনের জন্য।

ইউএনওডিসি জানিয়েছে, আফিম চাষ থেকে মিয়ানমার বছরে ১০০ কোটি থেকে ২৪০ কোটি ডলার আয় করছে, যা দেশটির ২০২২ সালের জিডিপির ১ দশমিক ৭ থেকে ৪ দশমিক ১ শতাংশের সমতুল্য। গত বছর মিয়ানমারে আনুমানিক ৭৯০ মেট্রিক টন আফিম চাষ হয়েছিল।

আফিম চাষ বাড়ার কারণ
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক সংঘাত-সহিংসতা। এতে মারাত্মক অনিশ্চয়তায় ভুগছে দেশটির বৈধ অর্থনীতি। এ অবস্থায় অনেক কৃষক অবৈধ পপি চাষে ঝুঁকছেন।

আরও পড়ুন>> রাস্তা থেকে মাদকাসক্তদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে তালেবান

জাতিসংঘ বলছে, বাজার এবং রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোর অপর্যাপ্ত সুবিধার পাশাপাশি ব্যাপক মূল্যস্ফীতি ২০২২ সালের শেষের দিকে মিয়ানমারের কৃষকদের আরও পপি বেশি চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করে।

ইউএনওডিসির হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মিয়ানমারে আফিম উৎপাদন ছিল বিগত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

সরকারের অনীহা
মিয়ানমারে আফিম চাষের মূল কেন্দ্র হলো শান রাজ্য। দেশটির প্রায় ৮৮ শতাংশ আফিম চাষ হয় এই একটি রাজ্যে (প্রায় ৪১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে)। এটি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় মেথামফেটামাইনের অন্যতম উৎস বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ইউএনওডিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শান রাজ্যের পাশাপাশি মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন এবং ভারত সীমান্তবর্তী চিন রাজ্যেও আফিম উৎপাদন বেড়েছে।

আরও পড়ুন>> মিয়ানমারের বৈদেশিক আয়ের মূল উৎসে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

বিশ্লেষকরা বলছেন, আফিম চাষের শত শত কোটি ডলারের বাণিজ্য বন্ধ করতে খুব একটা আগ্রহী নয় দেশটির জান্তা সরকার।

চলতি বছরের শুরুর দিকে এক বিরল স্বীকারোক্তিতে মিয়ানমারের মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান বলেছিলেন, আফিম ব্যবসা বন্ধে তাদের প্রচেষ্টা তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না।

সূত্র; এএফপি, এনডিটিভি
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।