গাজায় আজ থেকেই যুদ্ধবিরতি, ঘরে ফেরার অপেক্ষায় ফিলিস্তিনিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৩৫ এএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির খবরে ফিলিস্তিনিদের উল্লাস। ফাইল ছবি: এএফপি

গাজায় বহুল প্রত্যাশিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে আজ। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে ১২টা) এই চুক্তি কার্যকর হবে বলে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার পর গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের সামান্য যা কিছু অবশিষ্ট রয়েছে, তা গুছিয়ে নিয়ে নিজেদের পুরোনো বসতবাড়িতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ঘরে ফেরার আনন্দ ও সংশয়

গাজার বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা সৌআদ ওয়ারশাগা বলেন, আমি অত্যন্ত খুশি। আমরা আমাদের জায়গা ও পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছে ফিরে যেতে চাই। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার জন্য কালকের অপেক্ষা আর সইছে না। প্রথম দিকের মানুষের সঙ্গে আমিও আমাদের বাড়িতে ফিরে যাই।

আরও পড়ুন>>

তবে এই আনন্দের সঙ্গে রয়েছে সংশয়। লতিফা কাশকাশ নামের এক নারী বলেন, আমি খুশি, কারণ আমি আমার এলাকায় ফিরে যেতে পারবো। তবে আমি ভয় পাচ্ছি, কারণ ইসরায়েলিদের বিশ্বাস করতে পারি না। আমরা প্রিয়জন হারানোর পাশাপাশি সবকিছু হারিয়েছি। আমরা এখানে তাঁবুতে বসবাস করছি, সেখানেও তাঁবুতে থাকতে হতে পারে।

রাফাহ থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহার

আল-জাজিরার আরবি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের কেন্দ্র থেকে তাদের যানবাহন সরিয়ে নিচ্ছে। গাজার দক্ষিণ সীমান্তে ফিলাডেলফি করিডোরে অবস্থান নিতে শুরু করেছে তারা।

শিশুদের জন্য সহায়তা প্রস্তুত

আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা গাজায় শিশুদের জন্য খাদ্য, পানি এবং ওষুধ সরবরাহে প্রস্তুতি নিয়েছে। সংস্থাটি বলছে, গাজায় থাকা ১ কোটি ১০ লাখ শিশুর অধিকাংশই বর্তমানে জরুরি খাদ্যের অভাবে রয়েছে। অনেক শিশুই দিনে এক বেলা খাবারের ওপর নির্ভর করছে।

যুদ্ধবিরতির আগে নতুন হামলা

যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আগে গাজায় নতুন করে হামলার খবর পাওয়া গেছে। ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, মধ্য গাজার নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে বেশ কিছু আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া উত্তর গাজায় বিমান হামলা এবং রাফাহ শহরে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই যুদ্ধবিরতি সাময়িক হতে পারে। তিনি বলেন, যদি দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় অগ্রগতি না হয়, তবে গাজায় হামলা আবার শুরু করার জন্য আমরা প্রস্তুত। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ও আসন্ন প্রশাসনের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

যুদ্ধে প্রাণহানি

গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৬ হাজার ৮৯৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১০ হাজার ৭২৫ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে হামাসের ওই দিনের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি মানুষ জিম্মি হয়েছিলেন।

গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত হিসেবে প্রথমদিনই তিনজন ইসরায়েলি জিম্মি এবং প্রায় ৯৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে।

সূত্র: আল-জাজিরা
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।