মাস্ক সরবরাহে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন শারমিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৩৭ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২০

‘অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের মালিক শারমিন জাহান জেনে শুনে কোভিড-১৯ সম্মুখযোদ্ধাদের মাস্ক সরবরাহে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) দরপত্রের কোটেশন অনুযায়ী ফেস মাস্ক সরবরাহ করেননি।’

শনিবার (২৫ জুলাই) শারমিনকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার মূল রহস্য উদঘাটনে তিনদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের রমনা জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস প্রতিবেদনে এসব কথা উল্লেখ করেন।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার রাতে তাকে শাহবাগ থেকে গ্রেফতার করা হয়। অধিক ও নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ঘটনার মূল হোতাসহ সহযোগীদের গ্রেফতার এবং তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালার স্বার্থে তিনদিনের রিমান্ড একান্ত প্রয়োজন। আসামি জামিনে মুক্তি পেলে চিরতরে পলাতক ও মামলার অপূরণীয় ক্ষতি হবে।

রিমান্ড শুনানি চলাকালে আদালতে শারমিন বলেন, ‘আমি বিএসএমএমইউতে ফেস মাস্ক সরবরাহ করি। চার লটের মধ্যে দুটো ভালো। যেগুলো খারাপ, সেগুলো আমাকে ফেরত দেয় কর্তৃপক্ষ। এক মাস আগে দেয়া মালের অভিযোগ ১৮ তারিখে আমাকে জানানো হয়। আমি চীনের উহানে ট্রেনিংয়ে ছিলাম। ট্রেনিং শেষে দেশে ফিরে মানুষের সেবা করতে এ কাজ করি।’

শারমিনের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল এবং জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মইনুল ইসলাম জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বিএসএমএমইউ উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার নির্দেশে শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন প্রক্টর মোজাফফর আহমেদ।

বিএসএমএমইউয়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া শুরু হয় গত ৪ জুলাই। প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাচে যারা দায়িত্ব পালন করেন তাদের দেয়া এন-৯৫ মাস্ক নিয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে তৃতীয় ব্যাচেই বাধে বিপত্তি। অভিযোগ ওঠে, তাদের দেয়া হয় নকল এন-৯৫ মাস্ক। নকল মাস্কে লেখা ভুল, লট নম্বর নেই। আসল এন-৯৫ মাস্কের সঙ্গে নকল মাস্কও সরবরাহ করে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে প্রায় ৮০-৯৫ লাখ টাকার মাস্ক নিয়েছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ।

এ ঘটনায় ‘অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল’কে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয় বিএসএমএমইউ। এ বিষয় তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের কারণ দর্শানোর নোটিশের প্রেক্ষিতে গত বুধবার জবাব দেন অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার শারমিন জাহান।

তারা বিষয়টিকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করেন। তাতে বলা হয়েছে, নকল মাস্ক সরবরাহ করার কোনো ইচ্ছা তাদের ছিল না। তাদের কাছে যেভাবে প্যাকেটজাত অবস্থায় মাস্কগুলো এসেছে সেভাবেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। তবে অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তারা মাস্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

জেএ/এএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।