বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার

‘তুলনামূলক’ প্রতিবেদন দাখিল, শুনানি ৯ ফেব্রুয়ারি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২৮ পিএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ফাইল ছবি

৫৪ ধারায় বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও ১৬৭ ধারায় জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের সুপারিশ এবং আইনের ‘তুলনামূলক চিত্র’ প্রতিবেদন আকারে আপিল বিভাগে দাখিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চে প্রতিবেদনটি দাখিল করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। এ বিষয়ে আগামী বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক।

আরও পড়ুন: ৫৪ ধারা নিয়ে আপিল বিভাগের রায় মানা রাষ্ট্রীয় কর্তব্য

আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যার্টনি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। অন্যদিকে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল, অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম (জেড আই) খান পান্না, ব্যারিস্টার অনীক আর হক, অ্যাডভোকেট মো. শাহীনুজ্জামান ও অ্যাডভোকেট এএম জামিউল হক ফয়সাল।

২০১৬ সালের ২৪ মে ওই দুই ধারা প্রয়োগের বিষয়ে কয়েক দফা সুপারিশ ও গাইডলাইন দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে রায় দেন।

এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় ৬ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতুবি করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকায় ওঠে।

আরও পড়ুন: আটক ব্যক্তিকে নির্যাতন করা যাবে না

বিষয়টি শুনানিতে উঠলে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘বিদ্যমান আইনে কী আছে, রায়ের সুপারিশে কী আছে, তার তুলনামূলক একটি চিত্র দেখানো হবে।’

তখন আদালত বলেন, ‘প্রস্তুত করেছেন।’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘তৈরি করেছি, আইন ও সুপারিশে কী আছে, তা পাশাপাশি রেখেছি।’

আদালত বলেন, ‘তাহলে দাখিল করেন, আমরা দেখি।’ পরে প্রতিবেদনটি দাখিল করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। এরপর আদালত বলেন, ‘নট টু ডে (আজ নয়)।’

আরও পড়ুন: আইন প্রয়োগ না হলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে

এর আগে ৬ জানুয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, রায়ের কিছু নির্দেশনা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, যা আদালতে উপস্থাপন করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ আইনগত ব্যাখ্যা জড়িত থাকায় আরও প্রস্তুতির জন্য সময় চাওয়া হয়েছে।

১৯৯৮ সালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী থেকে বেসরকারি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা হয়। এরপর ওই বছরের ২৩ জুলাই মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনার পর বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করে সরকার।

কমিটি ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষে কয়েকটি সুপারিশ করে। এসব সুপারিশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টসহ (ব্লাস্ট) অন্যরা হাইকোর্টে রিট করে। এর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট এ বিষয়ে কয়েক দফা নির্দেশনাসহ রায় দেন। এ রায়ে ছয় মাসের মধ্যে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রচলিত বিধি সংশোধন করার পাশাপাশি ওই ধারা সংশোধনের আগে কয়েক দফা নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের ওপর ২০১৬ সালের ২৪ মে আপিল বিভাগ রায় দেন। রায়ে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতারের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য ১০ দফা এবং অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট, বিচারক ও ট্রাইব্যুনালের প্রতি ৯ দফা গাইডলাইন দেওয়া হয়। পরে এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদনটি করে।

এফএইচ/জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।