অ্যাটর্নি জেনারেল

কোটা বাতিলের আন্দোলন করে জনদুর্ভোগ বাড়ানোর যৌক্তিকতা নেই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৩৫ পিএম, ১০ জুলাই ২০২৪

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের বিষয়ে আন্দোলন করে জনদুর্ভোগ বাড়ানোর যৌক্তিক কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইনকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর একমাসের স্থিতাবস্থা এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র বহাল রেখে আদেশ দেওয়ার পর বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

এর আগে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৭ আগস্ট দিন ঠিক করা হয়েছে।

এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

বুধবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মুহাম্মদ ( এ এম) আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।

অ্যাটর্নি জেনারেলের জানান, সুপ্রিম কোর্টের আদেশেও আছে আন্দোলনকারীদের কোনো বক্তব্য থাকলে তারা আইনজীবীর মাধ্যমে আপিল বিভাগে দিতে পারবে। তাই এখন আর যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। এখন উচিত এটা বন্ধ করে নিজ নিজ অবস্থানে ফিরে যাওয়া। আন্দোলন করে জনদুর্ভোগ বাড়ানোর যৌক্তিক কোনো কারণ নেই তাদের কাছে।

আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি ছিল, পরবর্তীতে সেটা ২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতির বিষয়ে সরকার একটি কমিটি করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সেটা বাতিল করে দেয়। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরির ক্ষেত্রে সেটা বহাল থাকে।

পরবর্তীতে এটা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি মামলা হয়। সেই মামলায় শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বিভাগ রায়ে কোটা পদ্ধতি বাতিলের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে দিয়েছেন। অর্থাৎ হাইকোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা পদ্ধতি যেটা আগে ছিল, সেটাই আবার বহাল হয়ে যায়।

পরবর্তীতে রায়টি চ্যালেঞ্জ করে আমরা আপিল বিভাগে একটি আবেদন করি। যেহেতু রায়ের অনুলিপি পাওয়া যায়নি, তাই আমরা সিএমপি ফাইল করেছিলাম। সেই সিএমপি কোর্টে আসছে আজ শুনানি হলো। আমরা কোর্টকে বললাম, এখনো রায়ের অনুলিপি পাইনি। রায় না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কিছু করতে পারছি না।

যেহেতু গত ৫ বছর ধরে কোটা পদ্ধতিটা বিলুপ্ত ছিল। সেই ক্ষেত্রে নতুন করে রায় না পাওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায়ের ওপর আমরা স্থগিতাদেশ চেয়েছিলাম। উভয়পক্ষকে শুনানি করে আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। অর্থাৎ যে অবস্থায় আছে, সেই অবস্থায়ই থাকবে।

কোটা কি থাকছে, কি থাকছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন যেহেতু স্থিতাবস্থা আছে, যেগুলা ছিল, সবগুলো থাকবে।

অ্যাটর্নি জেনারেল আন্দোলনকারীদের বিষয়ে বলেন, আমি বলবো সুপ্রিম কোর্ট এটা বিবেচনায় নিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের আদেশেও আছে আন্দোলনকারীদের কোনো বক্তব্য থাকলে তারা আইনজীবীর মাধ্যমে আপিল বিভাগে দিতে পারবে। তাই এখন আর যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। এখন উচিত এটা বন্ধ করে নিজ নিজ অবস্থানে ফিরে যাওয়া। আন্দোলন করে জনদুর্ভোগ আর বাড়ানোর যৌক্তিক কোনো কারণ নেই তাদের কাছে।

কোটার প্রকৃত অবস্থা কি হলো এখন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আগে যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থায়ই আছে। স্থিতাবস্থা দেওয়া হয়েছে সাবজেক্ট ম্যাটারে। সাবজেক্ট ম্যাটারে এটা বাতিল করা ছিল। যে বিজ্ঞপ্তিগুলো রয়েছে, সেগুলোতে কোটা পদ্ধতি লাগবে না। নতুন করে কোনো বিজ্ঞপ্তি দিতে হলে, এখন আপাতত কিছু করবে না। মামলাটা আগামী ৭ তারিখে শুনানি হবে, তখন ঠিক করবে এটা।

এফএইচ/এমআইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।