মৃগী রোগের লক্ষণ কী ও রোগীদের কীভাবে সাহায্য করবেন?

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:২০ এএম, ২৬ মার্চ ২০২৩

মৃগী রোগ একটি অসংক্রামক দীর্ঘস্থায়ী মস্তিষ্কের রোগ। যা সব বয়সের মানুষকে প্রভাবিত করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৫০ মিলিয়ন মানুষ মৃগীরোগে ভুগছেন। স্নায়বিক রোগগুলির মধ্যে মৃগী রোগে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

মৃগীরোগে আক্রান্তদের হঠাৎ খিঁচুনি হয়। খিঁচুনি হলো মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক ও অত্যধিক বৈদ্যুতিক ক্রিয়াকলাপের আকস্মিক বৃদ্ধি, যা একজন ব্যক্তির উপস্থিতি বা আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে।

আরও পড়ুন: ঘামও হতে পারে কঠিন রোগের লক্ষণ, বুঝবেন যেভাবে

বিশ্বব্যাপী মৃগী রোগের প্রধান কারণ হলো সংক্রমণ। মস্তিষ্কের সংক্রমণের কারণে খিঁচুনি হতে পারে। জেনেটিক বা বংশগত কারণেও মৃগী রোগ হতে পারে। জন্মের সময় অক্সিজেনের কম মাত্রার কারণেও এই রোগ হতে পারে। ইমিউন সিস্টেম মস্তিষ্কের কোষগুলোকে আক্রমণ করার কারণেও হতে পারে মৃগী রোগ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জন্মগত ত্রুটি মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে মৃগীরোগের একটি সাধারণ কারণ। কিছু জন্মগত ত্রুটি যা মৃগীরোগের সঙ্গে যুক্ত আছে। তার মধ্যে আছে- ফোকাল কর্টিকাল ডিসপ্লাসিয়া, পলিমাইক্রোজিরিয়া ও টিউবারাস স্ক্লেরোসিস।

মস্তিষ্কের অন্যান্য অস্বাভাবিকতা আছে যেগুলো মৃগীরোগের সঙ্গে যুক্ত। মাথায় আঘাতের পরে মস্তিষ্কের দাগ, স্ট্রোকের পরে মস্তিষ্কের ক্ষতি ও টিউমারও মৃগীরোগের কারণ হতে পারে।

আরও পড়ুন: ভাইরাল ইনফেকশন ঠেকাতে এ সময় যা করবেন

মৃগী রোগের প্রাথমিক লক্ষণ কী কী?

খিঁচুনি ধরনের উপর নির্ভর করে একজন ব্যক্তির উপসর্গ পরিবর্তিত হতে পারে। বারবার খিঁচুনি মৃগী রোগের অন্যতম প্রাথমিক লক্ষণ। খিঁচুনি হওয়ার আরও লক্ষণগুলো হলো-

১. চেতনা হারানো
২. পেশির অনিয়ন্ত্রিত গতিবিধি
৩. যোগাযোগ ও বোঝার সমস্যা
৪. ভয় ও উদ্বেগ
৫. শ্বাসকষ্ট
৬. হঠাৎ হাত কাঁপা
৭. হাত থেকে জিনিস পড়ে যাওয়া
৮. একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা ইত্যাদি।

আরও পড়ুন: গ্লুকোমা কত ধরনের ও লক্ষণ কী কী?

মৃগী রোগে আক্রান্তদের কীভাবে সাহায্য করবেন?

যদি কেউ খিঁচুনিতে ভোগেন তাহলে কিছু পদক্ষেপ নিলে যে কোনো ধরনের হতাহতের ঘটনা এড়ানো যায়। জেনে নিন করণীয়-

আক্রান্ত ব্যক্তি যেন স্বাধীনভাবে শ্বাস নিতে পারে তা নিশ্চিত করুন। মুখ উপরের দিকে উঠিয়ে রাখলে তা নামিয়ে দিন, তাহলে শ্বাস নিতে সুবিধা হবে। আক্রান্তের মুখে পানি, ওষুধ বা কোনো খাবার দেবেন না, প্রতিক্রিয়াহীন এ সময় খাবার গলায় আটকে তার দম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

ব্যক্তির ঝাঁকুনিপূর্ণ গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধ করার চেষ্টা করবেন না। এতে তারা পেতে পারেন। তাই খিঁচুনি শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের ধরে রাখার চেষ্টা করবেন না। একটি নরম তোয়ালে বা একটি কুশন তাদের মাথার নিচে রাখতে হবে যাতে তারা দ্রুত অনৈচ্ছিক নড়াচড়ার সময় নিজেদের ক্ষতি না করে।

আরও পড়ুন: গরমে অতিরিক্ত লেবু পানি পান করা হতে পারে বিপজ্জনক

যদি কেউ একজন ব্যক্তির খিঁচুনি হতে দেখেন, তবে তিনি এ’কয়টি সহজ পদক্ষেপ অনুসরণ করে একটি জীবন বাঁচাতে পারেন। গুরুতর সমস্যা দেখলে দ্রুত রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।

আজ বিশ্ব মৃগী রোগী দিবস। প্রতিবছর ২৬ মার্চ এই দিবস বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। মৃগীরোগ সম্পর্কে জনসাধারণের সচেতনতা বাড়াতেই এ দিবস পালন করা হয়।

অনিতা কফম্যান ফাউন্ডেশন পার্পল ডে’তে মৃগী রোগের উপর সর্বকালের সর্ববৃহৎ প্রশিক্ষণ সেশনের সুবিধা প্রদান করে একটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড স্থাপন করেছে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া/ন্যাশনাল টুডে

জেএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।