আইনি সহায়তা পাওয়া যায় স্বল্প ও বিনামূল্যে

আপনি কি জানেন, স্বল্প ও বিনামূল্যেও যে আইনি সহায়তা পাওয়া যায়? ন্যায়বিচার সবার অধিকার হলেও বাস্তবে অনেক মানুষ আইনের সুবিধা পেতে ব্যর্থ হন। কারণ হিসেবে বলা যায় আর্থিক অসামর্থ্য, অজ্ঞতা কিংবা সামাজিক প্রতিবন্ধকতা। আজ (২৮ এপ্রিল) আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে বিষয়টি আরও একবার মনে করিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
আইনগত সহায়তা হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা, যা সমাজের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল, প্রান্তিক ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে আইনি সহায়তা প্রদান করে। এই ক্ষেত্রে আইনগত সহায়তা তাদের ন্যায়বিচারে প্রবেশের পথ সুগম করে।
বাংলাদেশ সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সকল নাগরিক আইনের চোখে সমান এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রাখেন। ২০০০ সালে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন’ প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার এই অধিকারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়। এর আওতায় গঠিত জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা (এনএএলএসএ) দেশের বিভিন্ন স্তরে জনগণকে আইনি সেবা পৌঁছে দিচ্ছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে দরিদ্র, নারী, শিশু, নির্যাতিত শ্রমিক, বয়স্ক নাগরিক ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা আইনগত সহায়তার প্রধান সুবিধাভোগী। পারিবারিক বিরোধ, জমি-জমা সংক্রান্ত মামলা, যৌন সহিংসতা, নির্যাতন ও বঞ্চনার মামলায় বিনামূল্যে আইনজীবী নিয়োগসহ নানা ধরনের সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
সরকারি সহায়তার পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংগঠনসমূহও আইনগত সহায়তা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে, যার ফলে সার্বিক আইনি সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এখনো গ্রামাঞ্চলে সচেতনতার অভাব, সামাজিক চাপ এবং সহায়তা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং একটি ন্যায্যতা ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে আইনগত সহায়তার ভূমিকা অপরিসীম। এই সহায়তা আরও বিস্তৃত ও সহজলভ্য করা জরুরি, যাতে কেউ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হন।
লিখেছেন: সাহিদা আক্তার, অ্যাডভোকেট, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ঢাকা
আরএমডি