চাঁদাবাজির মামলায় এনসিপি নেতাসহ কারাগারে ৫
হাসপাতালে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার আসামিরা/ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মব তৈরি করে একটি হাসপাতালে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাসহ পাঁচজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুর রহমান এ আদেশ দেন। পাঁচ আসামি হলেন এনসিপির ঢাকা মহানগরীর মোহাম্মদপুর থানার যুগ্ম সমন্বয়কারী আব্দুর রহমান মানিক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানার সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বি এবং হাবিবুর রহমান ফরহাদ, মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান ও মো. শাহিন হোসেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পাঁচজনকে আদালতে হাজির করার পর সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই মো. নাজমুল ইসলাম প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে রিমান্ড শুনানির জন্য মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিন ধার্য করেন।
চাঁদাবাজির অভিযোগে সেইফ হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক শিল্পী আক্তার সোমবার মোহাম্মদপুর থানায় এ মামলা করেন। এতে বলা হয়, অভিযুক্ত শাহিন গত ২০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোহাম্মদপুরের সেইফ হাসপাতালে এসে তার গর্ভবতী স্ত্রীর বাচ্চার অবস্থা খারাপ হওয়ায় প্রসবের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন। কর্তৃপক্ষ তাকে অন্য হাসপাতালে যেতে বললেও তিনি ফের অনুরোধ করেন, যেভাবে হোক এখানে প্রসবের ব্যবস্থা করা হোক। তখন কর্তৃপক্ষ তার কাছ থেকে সব কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে প্রসবের কাজ শুরু করে এবং তা চলমান থাকা অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে একটি মৃত ছেলেসন্তান প্রসব হয়।
আরও পড়ুন
নারায়ণগঞ্জে চাঁদা নিতে গিয়ে গণপিটুনিতে ইউপি সদস্য নিহত
বিএনপি জামায়াত এনসিপি কেউ দুর্নীতির বাইরে না: জোনায়েদ সাকি
চাঁদা না পেয়ে যুবদল নেতার বাহিনীর তাণ্ডব, ১৬ মাহিন্দ্রা ভাঙচুর
মামলায় অভিযোগ করা হয়, শাহিন বাচ্চা মারা যাওয়ার কারণে মামলা না করার জন্য হাসপাতালের মালিকের ছেলে মো. আবু সাঈদের কাছে গত ২২ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় আসামিরা হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ও সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করে দেড় লাখ টাকার ক্ষতি করেন। একপর্যায়ে তারা সাঈদকে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দেন। ভয়ে আসামিদের এক লাখ ২০ হাজার টাকা দেন বাদী। তারা চাঁদা নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান এবং অবশিষ্ট টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে দিতে বলেন। এরপর তারা বিভিন্ন সময় ফোন করে টাকা দাবি ও অন্যথায় মামলার হুমকি দেন। সর্বশেষ গত ২৮ সেপ্টেম্বর আসামিরা আরও এক লাখ টাকা নেন এবং বাকি টাকা দ্রুত দেওয়ার জন্য চাপ তৈরি করেন।
উল্লেখ, রাজধানীর ধানমন্ডিতে একজন প্রকাশককে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে তার বাসায় মব করার অভিযোগে গত ২০ মে আটক হয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাইফুলসহ তিনজন। পরে ওই দিন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।
এমআইএন/একিউএফ/জিকেএস