ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ভ্রমণ

পূর্বাচলের ৩০০ ফিট ভ্রমণে যা দেখবেন

ভ্রমণ ডেস্ক | প্রকাশিত: ০২:৫২ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজধানী ঢাকার পূর্বাচলের ৩০০ ফিট সড়কটি এরই মধ্যে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম দৃষ্টিনন্দন এক্সপ্রেসওয়েতে। যার নাম বর্তমানে ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে। ভ্রমণপিপাসুরা সময় পেলেই ঘুরে আসেন ৩০০ ফিট থেকে। বছরের যে কোনো সময়ই এখানে ঘুরতে যাওয়া যায়। প্রশস্ত সড়ক, দৃষ্টিনন্দন জলাধার এবং দর্শনীয় স্থান ৩০০ ফিটকে গুরুত্ববহ করে তুলেছে।

জানা যায়, সংশোধিত নকশায় ২৩৫ ফিট হলেও পূর্বের নামেই এখনো পরিচিত ৩০০ ফিট। কুড়িল থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত সাড়ে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ এটি। মূলত প্রস্থ বরাবর ৩০০ ফিট সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের শুরু থেকেই প্রসিদ্ধ হয়েছে ৩০০ ফিট নামটি। কুড়িল থেকে সড়কটি ১৪ লেনে ভাগ হয়ে সাড়ে ৬ কিলোমিটার চলে গেছে বালু ব্রিজ পর্যন্ত। ১৪ লেনের ৮টি এক্সপ্রেসওয়েতে দ্রুতগামী যানবাহনগুলো ঢাকার বাইরে থেকে যাওয়া-আসা করে। ৬টি হলো সার্ভিস রোড, যেগুলোতে চলাচল করে স্থানীয় গাড়িগুলো। তারপর বালু ব্রিজের পর থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়কটি ১২ লেন। এখানে ৬টি এক্সপ্রেসওয়ে, ৬টি সার্ভিস রোড আছে।

সড়কটির অবস্থান ঢাকার উত্তর-পূর্ব দিকে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানায়। শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর মাঝখানে প্রায় ৬,২১৩ একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে সড়কটি। ঢাকার সঙ্গে বিভিন্ন অঞ্চলের সংযোগ স্থাপন করেছে বিরামহীন সড়কটি। যার মধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম ও কিশোরগঞ্জ উল্লেখযোগ্য। মূলত ৩০০ ফিটের মাধ্যমে ঢাকার পশ্চিমাংশের সঙ্গে দেশের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের যাতায়াত সুগম হয়েছে। বিমানবন্দর সড়ক ও প্রগতি সরণির সঙ্গে ঢাকার পূর্বের ইস্টার্ন বাইপাসের সংযোগ ঘটায় বহিরাগতরা ঝামেলাবিহীনভাবে নানা গন্তব্যে যেতে পারেন।

৩০০ ফিট বারো মাসই আকর্ষণীয় দর্শনার্থীদের কাছে। স্থানীয়রাসহ দূর-দূরান্তের মানুষও সময় কাটাতে আসেন। বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে বর্ষা মৌসুম তথা জুন-জুলাইয়ের দিকে আসা ভালো। ১০০ ফুট খালের দুপাশে লাগানো গাছগুলো ছায়ার ব্যবস্থা করে কিছুটা। দু’ধারে শরতের কাশবন দেখা যায় অক্টোবরের প্রথমদিকে। খালের দু’পাশের পায়ে হাঁটা পথে কিছুটা সময় ব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি ভুলে যাওয়া যায়।

সড়কের দুপাশে আছে লাইটপোস্ট। সন্ধ্যার পর নয়নাভিরাম আলোকসজ্জায় জেগে ওঠে অন্য এক বাংলাদেশ। নান্দনিক নকশার ৬টি ফুটওভার ব্রিজ শৈল্পিক মনকে চমকে দেয়। এখানে দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায় নিচের সবুজ আইল্যান্ড ও পিচঢালা রাস্তার প্যাটার্ন কিংবা দুপাশের নীল হ্রদ। বালু ব্রিজে দাঁড়িয়ে নদীর দিকে তাকিয়ে সময় কাটানো যায়। এ ছাড়া ব্রিজগুলোর বাইপাস রাস্তা ধরে নিচে নেমে নৌকা ভ্রমণ করা যায়। কুড়িল থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত যেতে মাত্র ৭-১০ মিনিট সময় লাগে। ঢাকার কাছে একদিনের ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত জায়গা এটি।

আরও পড়ুন
ছুটির বিকালে ঢাকার মধ্যে ঘুরতে পারেন ৫ স্থানে 
শীতকালে ভ্রমণের সুবিধা-অসুবিধা কী? 

৩০০ ফিটের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান নীলা মার্কেট। বালু ব্রিজ পার হয়ে ইন্টারসেকশন বা ইউলুপ দিয়ে ডানেই নীলা মার্কেট। খাবারের দোকান ও ছোট্ট শিশু পার্ক মিলে জায়গাটি মেলার মতো মনে হবে। এখানকার হাঁসের মাংস, চিতই পিঠা, বালিশ মিষ্টি বেশ জনপ্রিয় খাবার। এ ছাড়া আছে স্পঞ্জ মিষ্টি, ভাজা মাছ, বিভিন্ন বাঙালি খাবার। গ্রামীণ আবহে গড়ে উঠেছে রেস্তোরাঁ। শরতকালে ভোলানাথপুর কবরস্থানের রাস্তায় ভেতরের দিকে চোখে পড়ে কাশফুলের রাজ্য।

কাঞ্চন ব্রিজ সংলগ্ন শীতলক্ষ্যার পাড়ে আছে বেশ কিছু রিসোর্ট ও বিনোদন পার্ক। ঢাকার বাইরে থেকে এলে বা এখানে রাত যাপন করতে রিসোর্টগুলো দারুণ। কাঞ্চন ব্রিজ থেকে বায়ে সিটি বাইপাস দিয়ে ১ কিলোমিটার ভেতরে গেলে হাতের ডানপাশে জিন্দা পার্ক। পূর্বাচলের কাছাকাছি নারায়ণগঞ্জের পার্কটি সময় কাটানোর দারুণ জায়গা।

এখানে কোনো বাধা ছাড়াই নিজস্ব গতিতে গাড়ি চালাতে পারেন। তবে গতি নিয়ন্ত্রণে রেখে গাড়ি চালানো উচিত। একা বা দলীয় যে কোনো ভ্রমণের জন্য নিরাপদ। কিন্তু সড়ক থেকে ডানে-বায়ের জায়গাগুলোতে ঘোরাঘুরির ক্ষেত্রে লোকালয়ের মধ্যে থাকা উচিত। জনমানবহীন স্থানে না যাওয়াটাই ভালো। এ ছাড়া ভ্রমণ মানেই আনন্দ। তবে অতিরিক্ত আনন্দ যেন অন্যদের বিরক্তির কারণ না হয়।

ঢাকার গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট থেকে এর দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার। ঢাকার যে কোনো প্রান্ত থেকে উত্তরাগামী যে কোনো বাস কুড়িল হয়ে যায়। কুড়িলে বাস থেকে নেমে নারায়ণগঞ্জ বা নরসিংদীগামী বাসে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত যাওয়া যায়। এ ছাড়া সিএনজি বা মোটরসাইকেলেও ঘুরে আসা যায়। ব্যক্তিগত গাড়ি থাকলে ভ্রমণের আনন্দ একটু বাড়িয়ে নেওয়া যায়।

এসইউ

আরও পড়ুন