৬ দাবিতে শহীদ মিনারে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের অবস্থান

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ১১:২০ এএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রহসনের বিচার বন্ধ, নির্দোষ চাকরিচ্যুত বিডিআরদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে চাকরিতে পুনর্বহালসহ ৬ দফা দাবিতে শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ভুক্তভোগী চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাদের স্বজনরা।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকেই তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড় হন। অনেকে রাত থেকেই সেখানে অবস্থান নেন।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা শহীদ মিনারের চারপাশে বিভিন্ন ব্যনার ও প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়েছেন। তাদের সবার মাথায়ও বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ব্যাচ। শহীদ মিনারের একপাশে একটি সামিয়ানা টাঙিয়ে রাত্রিযাপন ও বিশ্রামের ব্যবস্থাও করেছেন তারা। সেখানে অনেকে বিশ্রাম করছেন।

শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা

অবস্থান কর্মসূচিতে তারা ‘বিজিবি না বিডিআর, বিডিআর বিডিআর’, ‘দিল্লি না ঢাকা-ঢাকা ঢাকা’, ‘আপস না সংগ্রাম-সংগ্রাম সংগ্রাম’ সহ দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লেগান দিচ্ছেন।

বিএম কামরুজ্জামান নামের একজন বিডিআর সদস্য বলেন, তৎকালীন স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা তার মসনদকে টিকিয়ে রাখার জন্য চৌকস বিডিআর বাহিনীকে ধ্বংস করে পার্শ্ববর্তী দেশকে খুশি করবার জন্য নিরীহ বিডিআরদের পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে বিচারের নামে সাজা দিয়েছে। এটা কোনো বিদ্রোহ নয়, এটা ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচার করে বিডিআরদের চাকরিতে পুনর্বহাল করা হোক।

আরও পড়ুন:

এ সময় সারা দেশ থেকে আগত চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য রাখেন। আগামী ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারিও তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে।

শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা

বিডিআরদের ৬ দফা দাবি হলো:

১. পিলখানার ভেতরে ও বাইরে ১৮টি বিশেষ আদালত ও অধিনায়কের সামারি কোর্ট গঠন করে যে বিডিআর সদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের সবাইকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

২. এরইমধ্যে হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত এবং সাজা শেষ হওয়া জেল বন্দি বিডিআর সদস্যদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রহসনের বিস্ফোরক মামলা বাতিল করতে হবে।

৩. গঠিত কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত ব্যতীত শব্দ এবং কার্যপরিধি ২ এর (ঙ) নং ধারা বাদ দিতে হবে। একই সঙ্গে স্বাধীন তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে অন্যায়ভাবে দণ্ডিত সর্বপ্রকার নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ উদঘাটন, মূল ষড়যন্ত্রকারী, হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা

৪. পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ হওয়া ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, ১০ জন বিডিআর সদস্যসহ সর্বমোট ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে জেলের ভেতর মারা যাওয়া প্রত্যেক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকলে দায়ী সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

৫. স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ধারণকারী বিডিআরের নাম ফিরিয়ে আনতে হবে।

এবং

৬. পিলখানার হত্যাকাণ্ডে শহীদের স্মরণে জাতীয় দিবস ঘোষণা করতে হবে এবং শহীদ পরিবারের সর্বপ্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

এমএইচএ/এসএনআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।