মাসব্যাপী যুব উৎসবে ২৭ লাখ ৪০ হাজার নারী ও কিশোরীর অংশগ্রহণ

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১১:৫৯ এএম, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

‘দেশ বদলাই, বিশ্ব বদলাই’ প্রতিপাদ্য নিয়ে মাসব্যাপী চলা বাংলাদেশ যুব উৎসব শেষ হয়েছে। এবারের উৎসবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল বাংলাদেশি তরুণীদের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক অংশগ্রহণ। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফুটবল, ক্রিকেট, কাবাডি, ব্যাডমিন্টন, ভলিবল ও বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলায় নারীদের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে দুই হাজার ৯৩১টি ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অন্তত ২৭ লাখ ৪০ হাজার নারী ও কিশোরী অংশ নেন। এর মধ্যে অন্তত ৮৫৫টি ছিল নারী ফুটবল ম্যাচ, যা দেশের কিছু দুর্গম এলাকায়ও অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বিপুল সংখ্যক নারীর অংশগ্রহণে এত বড় ক্রীড়া আসর এর আগে কখনোই হয়নি!

অন্তর্বর্তী সরকার ও দেশের ৫০০ এর বেশি উপজেলা ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এই নারীদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এসব ম্যাচে শত শত দর্শকের উপস্থিতি ছিল, যা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এই বাস্তবতা সত্ত্বেও কিছু গণমাধ্যমে এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে নারীদের ফুটবল খেলা নিয়ে আক্রমণের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত সত্য হলো, সারাদেশে শত শত নারী ফুটবল ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটি ম্যাচ স্থানীয় কিছু ব্যক্তি এবং মাদরাসার শিক্ষার্থীদের দ্বারা বিঘ্নিত হয়েছে, যা বেসরকারি সংগঠনগুলো আয়োজন করেছিল।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিঘ্নিত দুটি ম্যাচে আয়োজকরা দর্শকদের খেলা দেখতে বাধা দেওয়ার জন্য অস্থায়ী বাঁধ তৈরি করেছিল এবং প্রবেশের জন্য টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করেছিল, যা স্থানীয় জনগণের ক্ষোভের কারণ হয়।

তবে বিঘ্নিত একটি ম্যাচ পরবর্তীতে আবারও অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শত শত দর্শক উপস্থিত ছিলেন। অন্য দুটি ম্যাচের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন জনগণের মতামত নিয়েছে এবং দেখা গেছে, নারীদের ফুটবল খেলা নিয়ে জনগণের কোনো আপত্তি নেই। বিঘ্নিত ম্যাচগুলো পুনরায় আয়োজনের সম্ভাবনা রয়েছে।

এই তিনটি ম্যাচ স্থগিত হওয়া অবশ্যই দুঃখজনক। তবে নারীদের অধিকার বাংলাদেশে সংকটে পড়েছে—এমন ধারণা একেবারেই বিভ্রান্তিকর। অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিটি নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। এর চেয়েও বড় বিষয় হলো, রেকর্ডসংখ্যক নারী অ্যাথলেটদের অংশগ্রহণ এবং তাদের উজ্জীবিত করতে উপস্থিত হাজারো দর্শক বাংলাদেশের সমাজে ২০২৫ সালে নারীদের অধিকার এবং সমর্থনের গভীরতা ও বিস্তারের প্রমাণ বহন করে।

এমইউ/বিএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।