বদিউল আলম মজুমদার
আমরা নারীদের নির্যাতিত-নিপীড়িত করে রেখেছি, এটার অবসান দরকার
‘দুর্ভাগ্যবশত পুরুষতন্ত্র আমাদের ওপর এমনভাবে জেঁকে বসেছে, আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি যেদিকে অগ্রসর হচ্ছে তাতে নারীদের প্রতি আমরা বৈষম্য করেছি। তাদের বঞ্চিত করেছি। তাদের অধস্তন করে রেখেছি। তাদের নির্যাতিত করেছি, নিপীড়িত করে রেখেছি। এটার অবসান হওয়া দরকার।’
শনিবার (৪ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে কন্যাশিশুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম আয়োজিত অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর সৈয়দা আহসানা জামান।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নারীর বিষয়ে সংস্কার কমিশনে যে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে সেখানে আমাদের ম্যান্ডেটে না থাকলেও পাঁচদিন আমরা আলোচনা করেছি, উত্থাপন করেছি ঐকমত্য কমিশনে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। সেখানে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের কিছু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি, যেগুলো খুব একটা সন্তোষজনক নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে সোচ্চার কণ্ঠ ছিলাম। আমাদের নারীর যে ন্যায্য রাজনৈতিক অধিকার সে আলোচনায় পরাজিত হয়েছে, জয়ী হয়েছে পুরুষতন্ত্র। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা, নারীদের অধস্তন রাখার দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই নারীদের যথাযথ অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত পুরুষতন্ত্র আমাদের ওপর এমনভাবে জেঁকে বসেছে, আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি যেদিকে অগ্রসর হচ্ছে তাতে নারীদের প্রতি আমরা বৈষম্য করেছি। তাদের বঞ্চিত করেছি। তাদের অধস্তন করে রেখেছি। তাদের নির্যাতিত করেছি, নিপীড়িত করে রেখেছি। এটার অবসান হওয়া দরকার।’
এটাও বলতে হবে আমরা অনেকদূর এগিয়েছি, তবে নারীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে পর্যায়ে পৌঁছানো দরকার আমরা সে পর্যায়ে পৌঁছাতে পারিনি। যোগ করেন তিনি।
বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, দেশের জন্মের আগে থেকেই নারীরা বৈষম্যের শিকার হওয়ায় এদেশের বেশিরভাগ নারী অপুষ্টিতে ভোগেন। ফলে তারা অপুষ্ট সন্তান জন্ম দেন। এটার অবসান হওয়া প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে সারা দেশে ৫৪ নারী যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৫৪ কন্যাশিশু। একই সময়ে ৩৯০ জন কন্যাশিশু ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। আর আত্মহত্যা করেছেন ১০৪ জন শিশু।
**প্রতিবেদনটিতে প্রথমে অসংগতি থাকায় সংশোধনী দেওয়া হলো
জেপিআই/এসএনআর/জেআইএম