সিইসি

আইনের শাসনের প্রকৃত রূপ দেখাতে চাই, তাতে যা হয় হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০২:০১ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০২৫
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, ছবি: জাগো নিউজ

এবারের নির্বাচনে আইনের শাসন কাকে বলে দেখাতে চাই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, এতে যা হয় হবে।

শনিবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় চট্টগ্রামে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত কর্মশালায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিইসি একথা বলেন।

নাসির উদ্দিন বলেন, আজকের এই কর্মশালা থেকে আমাদের বিভিন্ন ক্যাপসগুলো উঠে আসবে। আমরা তো সব জানি না, তাই আমরা অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছি, যারা এর আগে নির্বাচনে কাজ করেছেন, তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শিখছি। যেখানে যেখানে ঘাটতি আছে, আমরা সেই ঘাটতি পূরণ করে নেবো। আমাদের এখানে খুব দ্রুত কাজ করতে হচ্ছে, অনেক চ্যালেঞ্জও আছে। সমস্যা হচ্ছে, আপনি যে কাজটা করতে যাবেন, সেখানে ‘অকাজ’ বেশি, এটা আমাদের এক ধরনের কালচারে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, সবাই মিলে একটি সুন্দর নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। আমরা চাই একটি এমপাওয়ার্ড প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার তৈরি করতে। আমরা একটি সম্পূর্ণ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রিসাইডিং অফিসার গড়ে তুলতে চাই। আপনাদের হাতে আমরা সব ক্ষমতা দিচ্ছি। আপনি যদি সেই ক্ষমতা ব্যবহার না করেন, তাহলে সেটাকে আমরা অপরাধ হিসেবে গণ্য করবো। আপনি যদি যথাসময়ে যথাযথ ব্যবস্থা না নেন, সেটাও আমরা ভালোভাবে নেবো না। ক্ষমতা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তার সঠিক ব্যবহারও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই, যেই পর্যায়ের ক্ষমতা আপনাদের দেওয়া হয়েছে, সেটি দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবেন।

নির্বাচনি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনারা আইনের মধ্যে থেকে দায়িত্ব পালন করবেন, নির্বাচন কমিশন আপনাদের পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাবে, এই নিশ্চয়তা আমি দিচ্ছি।

আরও পড়ুন:
আমরা সহজে ছাড়ার পাত্র নই, গোলমাল হলে পুরো আসনে ভোট বন্ধ: সিইসি

নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো একটি স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা। এজন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে বিভিন্ন পেশার মানুষ যাদের মধ্যে কেউ কেউ আগে কখনো ভোটগ্রহণের অভিজ্ঞতা পাননি তারাও দায়িত্ব পালনে দক্ষ হয়ে ওঠেন। ‘ওয়ান সাইজ ফিটস অল’ পদ্ধতিতে নয় বরং অংশগ্রহণকারীদের পটভূমি বিবেচনায় প্রশিক্ষণ মডিউল তৈরি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ভোটগ্রহণকেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসারই হবেন সেই কেন্দ্রের ‘চিফ ইলেকশন অফিসার’। আইন অনুযায়ী সব ধরনের ক্ষমতা প্রয়োগের দায়িত্ব তার ওপরই থাকবে।

তিনি বলেন, প্রয়োজনে ভোটকেন্দ্র স্থগিত করুন, আইন প্রয়োগ করুন তবে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সাহসের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিরাপত্তা। প্রশাসনিক, আইনগত ও প্রযুক্তিগত নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনাই সবচেয়ে কঠিন বিষয়। এজন্য তিনি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন একটি ‘সেন্ট্রাল কো-অর্ডিনেশন সেল’ এবং ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স ইউনিট’ গঠন করছে, যাতে দেশের যেকোনো স্থান থেকে দ্রুত যোগাযোগ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

সিইসি বলেন, একটি সফল নির্বাচন আয়োজনের মূল চাবিকাঠি হলো সমন্বয়। প্রিসাইডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ই নির্বাচনের সাফল্য নিশ্চিত করবে।

তিনি আরও জানান, নির্বাচন কমিশন এরইমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া তথ্য ও এআই-ভিত্তিক অপপ্রচার মোকাবিলায় একটি সেল গঠন করেছে। তবে এটাও বলেন, সেলের কার্যক্রম সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে যথাযথ প্রচার এখনো হয়নি।

এমআরএএইচ/এসএনআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।