চট্টগ্রাম বন্দর ইজারার প্রতিবাদে মিছিল, আটকে দিলো পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৯:৩৮ পিএম, ২২ অক্টোবর ২০২৫
চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে তা আটকে দেয় পুলিশ/ছবি: জাগো নিউজ

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ (এনসিটি) কয়েকটি টার্মিনাল দেশি-বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বন্দর অভিমুখে মিছিল আটকে দিয়েছে পুলিশ। বুধবার (২২ অক্টোবর) শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) এই মিছিলের আয়োজন করে। এর আগে নগরীর আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়ে আয়োজিত সমাবেশ থেকে আগামী ১ নভেম্বর অনশনের ডাক দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এই অনশন কর্মসূচি পালন করা হবে বলে সমাবেশ থেকে জানানো হয়।

বুধবার সকাল ১১টায় শুরু হওয়া ওই সমাবেশে স্কপভুক্ত শ্রমিক সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারীদের একাংশ যোগ দেয়। সমাবেশে চট্টগ্রাম বন্দর সিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, শ্রমিকদের দাবি মানা না হলে সভা-সমাবেশসহ হরতালের মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সমাবেশে ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি) চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি তপন দত্ত বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। শ্রমিকদের পেটে লাথি দিয়ে বন্দর বিদেশিদের দেওয়া যাবে না। বন্দরকে বিদেশিদের হাতে দিয়ে দেওয়ার জন্য বন্দরের মাশুল বাড়ানো হয়েছে, অতিরিক্ত উচ্চহারে গেটপাস, যানবাহনের প্রবেশ ফি নির্ধারণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এসময় তিনি আগামী ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১০টায় অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ওই কর্মসূচিতে শত শত শ্রমিক-কর্মচারী অনশনে বসবে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এসকে খোদা তোতন, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হক, বন্দর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খোকনসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।

সমাবেশে শেষে আগ্রাবাদ মোড় থেকে একটি মিছিল বন্দর অভিমুখে যাত্রা শুরু করলে নগরীর বারেক বিল্ডিং মোড়ের কাছে মিছিলটি আটকে দেয় পুলিশ। এসময় পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও পরে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল শেষ হয়।

এরআগে ,গত ৯ অক্টোবর সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে ১১ অক্টোবর থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের জন্য বন্দর এলাকায় সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।

ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‍‍চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। দেশের মোট আমদানি ও রপ্তানির সিংহভাগ কার্যক্রম এই বন্দরের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য, শিল্পকারখানার কাঁচামালসহ আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য পণ্য পরিবহনের জন্য প্রতিদিন প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার পণ্যবাহী যানবাহন চট্টগ্রাম বন্দরে চলাচল করে। এই বিপুল পরিমাণ যানবাহন চলাচলের কারণে বন্দরের আশপাশে ট্রাফিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বন্দর এলাকায় মিছিল, সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, পথসভা ইত্যাদি আয়োজনের ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়ে বন্দরের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে, যা জাতীয় অর্থনীতির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম নির্বিঘ্ন ও নিরবচ্ছিন্ন রাখার স্বার্থে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশ ১৯৭৮ এর ৩০ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে চট্টগ্রাম বন্দর সংলগ্ন বারেক বিল্ডিং মোড়, নিমতলা মোড়, ৩ নং জেটি গেট, কাস্টমস মোড়, সল্টগোলা ক্রসিংসহ বন্দর এলাকায় যে কোনো ধরণের রাজনৈতিক, শ্রমিক বা সামাজিক সংগঠন কর্তৃক মিছিল, সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, পথসভা ইত্যাদি ১১ অক্টোবর থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।

এমডিআইএইচ/এমএমকে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।