জাগো নিউজকে জ্বালানি উপদেষ্টা

বিল বকেয়া থাকলে ১১ নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করবে আদানি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৫৫ পিএম, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান/ফাইল ছবি

প্রাপ্য বকেয়া বিল আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ পরিশোধ না করলে ১১ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে ভারতের আদানি পাওয়ার।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অক্টোবরের শেষ দিকে আদানি পাওয়ারের হেড অব এনার্জি রেগুলেটরি অ্যান্ড কমার্শিয়াল অভিনাশ অনুরাগ পিডিবির চেয়ারম্যানের কাছে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠান। চিঠিতে ভারতের আদানি পাওয়ার জানায়, বারবার অনুরোধ ও যোগাযোগের পরও পিডিবি ৪৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৪৯.৬ কোটি ডলার) বকেয়া পরিশোধ করেনি।

এর মধ্যে, পিডিবির নিজস্বভাবে স্বীকৃত বকেয়া ২৬২ মিলিয়ন ডলার এখনও অনাদায়ী রয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। চিঠিতে আদানি পাওয়ার আরও দাবি করে, বারবার বিল বকেয়া থাকায় তারা ২০১৭ সালের পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (পিপিএ)-এর ধারা ১৩.২ (i) ও (ii) অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার আইনি অধিকার রাখে।

কোম্পানিটি আরও জানায়, সরবরাহ বন্ধ থাকলেও কেন্দ্রের ‘নির্ভরযোগ্য সক্ষমতা’র ভিত্তিতে তারা ক্ষমতা চার্জ (ক্যাপাসিটি পেমেন্ট) পাওয়ার অধিকারী থাকবে।

বিদ্যুৎ বন্ধের হুমকির চিঠি পেয়েছেন বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাতে তিনি বলেন, আদানির চিঠি পেয়েছি। তারা বলেছে যদি ১০ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হয় তাহলে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেবে। আমরা দেখি কী করি, আলোচনায় বসবো।

আরও পড়ুন

আদানির সঙ্গে চুক্তিতে অনিয়ম: পূর্ণাঙ্গ নিরীক্ষা করবে দুদক
আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি বাতিল করলো শ্রীলঙ্কা

এর আগে, আদানি পাওয়ার ২০২৪ সালের নভেম্বরে ৮০০ মিলিয়ন ডলার বকেয়ার কারণে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায় ৬০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছিল। এতে বিদ্যুৎ সংকটে পড়েছিল বাংলাদেশ। যদিও পিডিবি সেই সময় এই বকেয়া অর্থের পরিমাণ নিয়ে আপত্তি জানায়। প্রতিষ্ঠানটি বলে, আদানি নিজস্ব হিসাব পদ্ধতি ব্যবহার করে এই পরিমাণ নির্ধারণ করেছে।

পিডিবির ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডা পাওয়ার প্ল্যান্ট (ক্ষমতা: ১৬০০ মেগাওয়াট) থেকে বাংলাদেশে মাসে গড়ে ৯৩২ দশমিক ৩১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এই কেন্দ্রটি কেবল বাংলাদেশে রপ্তানির উদ্দেশে নির্মিত। মূলত আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি করেছিল বিগত শেখ হাসিনা সরকার। ২০১৮ সালে ভারত সরকারের নিয়ম অনুযায়ী আদানি শুধু প্রতিবেশী দেশে সরবরাহ করতে পারতো তারা। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত সরকার আইনে পরিবর্তন এনে আদানিকে স্থানীয় বাজারে বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমতি দেয়।

এনএস/এএমএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।