রেলের সাবেক ডিজিসহ ৬ জনের নামে মামলা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:২২ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়/ফাইল ছবি

বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘রোলিং স্টক অপারেশন্স ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’–এর অধীনে ১২৫টি লাগেজ ভ্যান কেনাকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রের ৩৫৮ কোটি টাকার ক্ষতিসাধনের অভিযোগে রেলের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি)সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদন, বাজার যাচাই, ফিজিবিলিটি স্টাডি ও প্রকৃত প্রয়োজন নিরূপণে গুরুতর অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি অর্থের অপচয় করার অভিযোগে মামলাটি দায়ের হয়েছে।

রোববার (১৬ নভেম্বর) সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক আকতার হোসেন। দুদকের উপসহকারী পরিচালক হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে সংস্থাটির জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ এ মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলেন–বাংলাদেশ রেলওয়ের সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক হারুন-অর-রশীদ ও মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত প্রধান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ মাহবুব চৌধুরী, পরিচালক মৃণাল কান্তি বণিক ও প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মতিন চৌধুরী।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৭৭ক/১০৯ ধারায় এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭–এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক মহাপরিচালক বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, তথ্য বিকৃতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় লাগেজ ভ্যান কেনার প্রস্তাব তৈরি, অনুমোদন গ্রহণ এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় গুরুতর অবহেলা করেছেন। বাংলাদেশের রেল অবকাঠামোতে এ ধরনের ভ্যানের প্রকৃত চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ক্রয় প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২১ জুলাই দুদক পরিচালিত এনফোর্সমেন্ট অভিযানে দেখা যায়, ২০১৮ সালে ৫০টি ব্রডগেজ (বিজি) ও ৭৫টি মিটারগেজ (এমজি) লাগেজ ভ্যান কেনার জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে রেলওয়ে। ক্রয় পরিকল্পনায় কৃষিপণ্য, ফল, মাংস, দুধসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহনের কথা উল্লেখ করে প্রকল্পের ডিপিপিতে মোট ব্যয় ধরা হয় ৩২৮ কোটি ৬ লাখ টাকা।

দুদকের এজাহারে বলা হয়েছে, ডিপিপিতে প্রকল্পটি আর্থিকভাবে লাভজনক হওয়ার যে হিসাব দেখানো হয়, তা বাস্তবে সম্পূর্ণ অমূলক ছিল। প্রকল্প দল ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মুনাফা দেখিয়েছিল ৩২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। কিন্তু বাস্তবে ২০২৪ সালের প্রথম আট মাসে আয় হয়েছে মাত্র ৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা, ২০২৩ সালের একই সময়ে আয় ছিল ৯ কোটি টাকা—যা পূর্বনির্ধারিত মুনাফার তুলনায় বহুগুণ কম।

দুদক মহাপরিচালক বলেন, বাজার সমীক্ষা, কৃষক বা ব্যবসায়ীদের চাহিদা যাচাই, স্টেশন পর্যন্ত পণ্য আনার সক্ষমতা, লজিস্টিকস সীমাবদ্ধতা—কোনো কিছুই যাচাই করা হয়নি। হিসাব বিকৃতি ও তথ্য গোপন করে লাগেজ ভ্যান কেনাকে লাভজনক বলে দেখানো হয়। এর ফলে রাষ্ট্রীয় ৩৫৮ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে এবং ১২৫টি লাগেজ ভ্যান থেকে কোনো প্রত্যাশিত আয়ও পাওয়া যায়নি।

এসএম/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।