বায়তুল মোকাররম মসজিদের সৌন্দর্যবর্ধনে ১৯৯ কোটি টাকার প্রকল্প

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৫৫ পিএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
বায়তুল মোকাররমের উন্নয়ন ও সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন/ছবি-জাগো নিউজ

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের আধুনিকায়ন, সৌন্দর্যবর্ধন ও উন্নয়নে ১৯৯ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) বায়তুল মোকাররমের উন্নয়ন ও সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা এ কথা জানান। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে এ ব্রিফিং হয়।

উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উন্নয়নে সবচেয়ে বড়ো যে উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। সেটি হলো-জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের আধুনিকায়ন, সৌন্দর্যবর্ধন ও উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৯ কোটি টাকা। এরই মধ্যে এ অর্থায়নের সম্মতি পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে মসজিদের মূল কাঠামো ঠিক রেখে অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যবর্ধন ও আধুনিকায়ন করা হবে, আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা এবং বহিরাঙ্গণে আচ্ছাদিত করা হবে, অফিস ভবন ও মিনার নির্মাণসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা যথাদ্রুত সম্ভব এ প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারব, ইনশাল্লাহ।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদটি আমাদের সবার মন্তব্য করে খালিদ হোসেন বলেন, সরকার তথা ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় মসজিদটিতে ইবাদতের যথোপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সচেষ্ট রয়েছে। আমরা সবার সহযোগিতা চাই, পরামর্শ চাই। বিশেষ করে মসজিদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সবার দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করব। আমরা যত্রতত্র নোংরা-আবর্জনা ফেলব না, আমরা ডাস্টবিন ব্যবহার করব। মসজিদের অযুখানা ও টয়লেট নিজে ব্যবহার করব এবং অন্যের ব্যবহার উপযোগী রাখতে যত্নশীল হবো।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, যে কোনো উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম-কানুন, বিধি-বিধান অনুসরণ করেই এগোতে হয়। ইচ্ছা করলেই রাতারাতি সবকিছু পরিবর্তন করে ফেলতে পারি না। আমাকে সরকারি বিধি-বিধান অনুসরণ করেই উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হয়। আমরা এরই মধ্যে বেশ কিছু কাজ সম্পন্ন করেছি, কিছু কাজ চলমান রয়েছে এবং অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে আরও কিছু কাজে হাত দেওয়া হবে।

উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উন্নয়ন ও সংস্কারমূলক কার্যক্রম তুলে ধরে খালিদ হোসেন বলেন, বৈদ্যুতিক সমস্যা নিরসনে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন করে সাব-স্টেশন নির্মাণ ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটর স্থাপন করা হয়েছে। অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নতুন করে সংযোজন এবং স্পর্শকাতর ৮০টি স্পটে ফায়ার হাইড্রেন্ট স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া পানির সমস্যা নিরসনে মসজিদের জন্য সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন এবং আধুনিক ও উন্নতমানের সাউন্ড সিস্টেম সংযোজন করা হয়েছে।

নতুন ড্রেন নির্মাণ এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার করা হয়েছে। মসজিদের ভেতরের ৪০টি এবং নারীদের নামাজ কক্ষের সব ক’টি এসি সার্ভিসিং ও সচল করা হয়েছে। ৪৯ লাখ ১৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ১২ হাজার স্কয়ার ফুট উন্নতমানের কার্পেট সংযোজন, মিনারের জায়নামাজ ও কার্পেট পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, গত একবছরে বায়তুল মোকাররমে ১২০টি নতুন সিলিং ফ্যান এবং তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় ১০টি পেডেস্টাল ফ্যান সংযোজন করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক অজুখানা ও টয়লেট পরিষ্কারের জন্য বেসরকারি সিকিউরিটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছে। এ কোম্পানির থেকে অজুখানা ও টয়লেট পরিষ্কারের জন্য ১২ জন লোক নিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া আধুনিক ও টেকসই ডিজাইনে মুসল্লিদের জন্য পূর্বদিকের ৩০টি টয়লেট ও অযুখানা নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। দক্ষিণ ও পূর্ব দিকের ক্ষতিগ্রস্ত ৪টি গেট নতুনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে এবং মসজিদে অভারহেড জুতার বক্স সরবরাহ করা হয়েছে।

বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট থেকে দুই কোটি টাকা বকেয়া আদায় করা হয়েছে এবং অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে দুটি দোকান উদ্ধার করা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এ মার্কেটের দুটি কার পার্কিংয়ের ইজারা ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।

তিনি বলেন, গত এক বছরে মসজিদ ও মার্কেটের মূলধন ৯০ কোটি থেকে ১১০ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের আধুনিকায়ন, সৌন্দযবর্ধন ও উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দ্রুত সময়ে শুরু হবে।

এসময় ধর্মসচিব মো. কামাল উদ্দিন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খান, ওয়াকফ প্রশাসক নূর আলমসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরএমএম/এমআরএম/এমআইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।