চাকরির স্বপ্ন দেখিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিত চক্রটি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৪৩ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

রাশিয়ায় আকর্ষণীয় বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশি যুবকদের বিদেশে পাঠিয়ে পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মুখে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগে মানবপাচারকারী একটি চক্রের মূলহোতাসহ চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৪।

গ্রেফতাররা হলেন- মূলহোতা রুবায়েত তসলিম (৪০), সৈয়দ শুভ্র সরজ (৩৯), আবু সাকিব (৩৫) ও মো. জুয়েল (৪৩)।

র‍্যাব জানায়, ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর দারুস সালাম থানার ‌‘এসআরএম ওভারসিস লিমিটেড’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে রাশিয়াগামী মানবপাচার চক্রের মূলহোতা রুবায়াতসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) মিরপুরের র‍্যাব-৪ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাবুদ্দিন।

তিনি বলেন, নিজেদের বৈধ জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচয় দিলেও প্রকৃতপক্ষে অন্য একটি এজেন্সির ব্যানারে আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের সঙ্গে যোগসাজশে কাজ করছিল। তারা ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে রাশিয়ায় উচ্চ বেতনের চাকরির কথা বলে দেশের বিভিন্ন জেলা ও গ্রাম থেকে যুবকদের বাছাই করত। পরে ভিসা ও অন্যান্য প্রক্রিয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা হতো।

চাকরির স্বপ্ন দেখিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মুখে ঠেলে দিত চক্রটি

রাশিয়ায় পৌঁছানোর পর ভুক্তভোগীদের সঙ্গে করা চুক্তি ভঙ্গ করে তাদের অতিরিক্ত কর্মঘণ্টায় কাজ করতে বাধ্য করা হয়। এমনকি রাশিয়ান কোম্পানি থেকে প্রাপ্য মাসিক বেতনের একটি অংশ চক্রের সদস্যরা কেটে নিত।

ভুক্তভোগীরা ন্যায্য পাওনা দাবি করলে তাদের জোরপূর্বক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানোর হুমকি দেওয়া হতো।

ভুক্তভোগীদের বরাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, এই চক্রের মাধ্যমে আগে পাঠানো বাংলাদেশিদের মধ্যে অন্তত চারজনকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানো হয়েছিল এবং তারা সেখানে নিহত হন।

এ ঘটনায় এক ভুক্তভোগী দারুস সালাম থানায় মামলা করলে সেই মামলার সূত্র ধরেই অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছে, তারা প্রায় আট বছরের বেশি সময় ধরে প্রতারণার মাধ্যমে বহু বাংলাদেশিকে রাশিয়ায় পাঠিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি করত, যেন ভুক্তভোগীদের দেশে ফিরে আসা কিংবা যুদ্ধে যেতে বাধ্য হওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প না থাকে।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

টিটি/এমআরএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।