তামাক নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুমোদনে তামাকবিরোধী জোটের অভিনন্দন
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং তরুণ প্রজন্মকে তামাকের ভয়াবহ আগ্রাসন থেকে রক্ষায় ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদন করায় অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (বাটা)। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিনন্দন জানায় সংগঠনটি।
তামাকবিরোধী জোট মনে করে, দীর্ঘ এক যুগ পর তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন সময়োপযোগী ও সাহসী সিদ্ধান্ত। বিশেষ করে ই-সিগারেট, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ নতুন তামাক ও নিকোটিন পণ্যের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব জনস্বাস্থ্য রক্ষায় একটি যুগান্তকারী অগ্রগতি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুমোদিত অধ্যাদেশের ইতিবাচক দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে—সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানসহ সব তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ, তামাকজাত দ্রব্যের সব ধরনের বিজ্ঞাপন, প্রচার ও প্রদর্শন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা,তামাক পণ্যের মোড়কে স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার পরিসর ৭৫ শতাংশে উন্নীত করা, নিকোটিন পাউচসহ নতুন পণ্যকে তামাকজাত দ্রব্যের সংজ্ঞার আওতায় আনা।
তবে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, খুচরা শলাকা বিক্রয় নিষিদ্ধকরণ ও তামাক পণ্য বিক্রেতাদের লাইসেন্সিং/নিবন্ধন ব্যবস্থা—এই দুটি তামাক নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পন্থা হওয়া সত্ত্বেও অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। খুচরা বিক্রির কারণে শিশু-কিশোর ও স্বল্প আয়ের মানুষ তামাক পণ্য সহজেই হাতের নাগালে পেয়ে যাচ্ছে, যা তামাক নিয়ন্ত্রণের মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তামাকবিরোধী জোট দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, তামাক কোম্পানির কর ফাঁকি, অবৈধ বাণিজ্য এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছে তামাক পণ্য বিক্রি রোধে বিক্রেতা নিবন্ধন ও খুচরা শলাকা বিক্রয় নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত বিধান অবিলম্বে সংযুক্ত বাস্তবায়ন করা জরুরি। সরকার দ্রুত এ বিষয়ে পরিপূরক আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে বলে জোট আশা প্রকাশ করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করে এবং তামাক ব্যবহারের কারণে দেশের অর্থনীতিতে স্বাস্থ্য ব্যয়, পরিবেশ ক্ষতি ও উৎপাদনশীলতা হ্রাসসহ অন্যান্য ক্ষতির পরিমাণ ৮৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এই প্রেক্ষাপটে উল্লিখিত অধ্যাদেশটি শক্তিশালী ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।
বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতৃত্ব, গণমাধ্যম, সিভিল সোসাইটি ও তরুণ সমাজকে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে।
ইএইচটি/এমআইএইচএস/এমএস