সাকাকে নিয়ে অ্যাটর্নি ও খন্দকার মাহবুবের বক্তব্য
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (সাকা) মুক্তযুদ্ধ চলাকালে ২৯ মার্চ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত দেশের বাইরে ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না সালাউদ্দিন কাদের। তাই খন্দকার মাহবুব আশা প্রকাশ করে বলেন, আদালত আমাদের আর্গুমেন্ট বিবেচনায় নিবেন এবং সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী খালাস পাবেন।
মঙ্গলবার দুপুরে আপিল বিভাগ থেকে বেরিয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ওই সময় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটিতে লেখা-পড়া করতেন। তার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।
অপরদিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবীর এমন দাবিকে সর্বৈব মিথ্যা বলে দাবি করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। মঙ্গলবার আপিল শুনানি শেষে ২৯ জুলাই রায়ের দিন ধার্য করার পর সাংবাদিকের কাছে রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষ এমন দাবি করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, একাত্তর সালের ১৩ এপ্রিল থেকে ঘটনার কথা বলেছে প্রসিকিউশন। কিন্তু আমরা বলেছি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ২৯ মার্চ ঢাকা থেকে পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটিতে চলে গেছেন। এ সংক্রান্ত সার্টিফিকেটও দিয়েছি। আমাদের মুল বক্তব্য উনি (সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী) ছিলেন না। উনি পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলেন। পাকিস্তানের উচ্চ স্তরের লোক এটা হলফনামা দিয়ে বলেছেন।
কিন্তু প্রসিকিউশন বলছে, উনি (সাকা চৌধুরী) দেশেই ছিলেন। উনার ওপরে হামলা হয়েছে। গাড়ীর চালক মারা গেছে। আমরা বলেছি চালকের পরিবারের তরফ থেকে সাক্ষী আনা হোক।
খন্দকার মাহবুব বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষীগুলো শোনা সাক্ষী। সাক্ষীগুলোকে দিনের পর দিন সেফহোমে রেখে শেখানো হয়েছে প্রসিকিউশনের পক্ষে, কি বলতে হবে। আমরা ঘটনা অস্বীকার করছি না। কিন্তু সালাউদ্দিন কাদের উপস্থিত ছিলেন না। আদালত এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন বলে আশা করেন খন্দকার মাহবুব।
জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বলছে উনি দেশে ছিলেন না, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এটা সর্বৈব মিথ্যা। সর্বশেষে তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছে দণ্ড কমাতে। আমরা এটাতেও আপত্তি জানিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, সালাউদ্দিন কাদেরের চৌধুরীর তান্ডব এবং নির্যাতনের কথা ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী দিয়ে বলেছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যর অধ্যাপক সালেহ উদ্দিন। ওনাদের মতো বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদরা কি মিথ্যা সাক্ষ্য দিবেন নাকি। অবশ্যই সালাউদ্দিন কাদের দেশে ছিলেন। যারা নির্যাতিত হয়েছে তারাও বলেছেন।
পাকিস্তানের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের বিষয়ে তিনি বলেন, সার্টিফিকেট দিতে পারেই। এর মানে এই নয় যে সে অপরাধ করেনি। আমি আশা করবো যে চার অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল ফাঁসি দিয়েছিলো সেটা বহাল থাকবে। তার মৃত্যুদণ্ড হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রসিকিউশনের পক্ষে অভিযোগ আনা হয়েছিলো যে, সালাউদ্দিন কাদেরের ওপর হামালা করা হয়েছিলো। কিন্তু স্বাক্ষী হিসেবে ঐ গাড়ীর ড্রাইভারকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
এফএইচ/আরএস/আরআইপি