‘না খেয়ে ঘরে থাকতে পারব, কিন্তু ঘরভাড়ার জন্য অত্যাচার করবে’
ঝর্ণা রাণী সাহা। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ফুটওভার ব্রিজের ওপর আমলকি, পেয়ারাসহ বিভিন্ন ফলমূল বিক্রি করতেন। করোনাভাইরাসের কারণে সেসব আর তেমন বিক্রি হয় না। তবে এই সময়ে বিক্রি বেড়েছে মাস্ক, গ্লাভসের। কিছু দিন ধরে ঘুরে ঘুরে সেসবই বিক্রি করছেন ঝর্ণা রাণী।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কারওয়ান বাজারের কাঁচা বাজার এলাকায় ঘুরে ঘুরে মাস্ক ও গ্লাভস বিক্রি করছিলেন তিনি। ঝর্ণার রাণীর হাতে গ্লাভস থাকলেও মুখে মাস্ক ছিল না। এ বিষয়ে ঝর্ণা রাণী বলেন, ‘রোদে পরতে পারছি না, মাথা ঘুরে মাস্ক পরলে। দুই দিন দিয়েছিলাম, তারপরে দেখি আর পারছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কষ্টের জীবন। কালকে একবার মাথা ঘুরে প্রায় পড়েই গেছিলাম, পারতেছিলাম না।’
করোনা ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে সরকারসহ চিকিৎসকরা সবাইকে ঘরে থাকতে বলছেন। এ সময় একটু কষ্ট হলেও বাসায় থাকা যায় কিনা জানতে চাইলে ঝর্ণা রাণী বলেন, ‘বাসায় থাকলে তো হয় না। হয়তো না খেয়ে থাকতে পারি। কিন্তু ঘর ভাড়ার জন্য তো অত্যাচার করবে। ঘর ভাড়ার জন্যই এগুলো (বাইরে কাজে আসতে) করতে হবে।’
ময়মনসিংহের বালিপাড়ায় তাদের গ্রামের বাড়ি। ঝর্ণা রাণীর পরিবারে মোট সদস্য আট জন। তাদের মধ্যে ঝর্ণা রাণী ও তার স্বামী পল্টন চন্দ্র সাহা ঢাকায় থাকেন। পল্টন চন্দ্রও ঘুরে ঘুরে মাস্ক ও গ্লাভস বিক্রি করছেন এ সময়। তাদের চার ছেলেমেয়ে।
এ বিষয়ে ঝর্ণা রাণী বলেন, ‘আমরা দুজনই (তিনি ও তার স্বামী) কষ্ট করি। কিন্তু ছেলেমেয়েদের বের হইতে দেই না। ছেলেমেয়েদের দেশে (গ্রামের বাড়িতে) রাখছি। তাদেরকে পড়াশোনা করাইতেছি। একজন এসএসসি পরীক্ষা দিছে, আরেকজন অষ্টম শ্রেণিতে, চতুর্থ শ্রেণিতে একজন, আরেকজন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। দোয়া কইরেন, আমাদের মতো যেন ওরা কষ্ট না করে।’
পিডি/এমএফ/জেআইএম