স্বজনদের ছাড়াই ঈদ কাটবে ৮ হাজারের বেশি দেশে ফেরা প্রবাসীর
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ৮ হাজারের বেশি বিদেশফেরত প্রবাসী পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে পারবেন না। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনায় তাদের সরকার নির্ধারিত আবাসিক হোটেল বা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে। সেখানেই ঈদ কাটবে তাদের।
করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে দেশে ফেরার পরও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে না পারায় প্রবাসী কর্মীদের ভেতর ক্ষোভ ও হতাশা রয়েছে। তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের ব্যাপারে ‘নো কম্প্রোমাইজ’ নীতি অনুসরণ করছেন।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত সর্বমোট ৪৯ হাজার ১৭৬ জন যাত্রী দেশে ফেরেন। তাদের মধ্যে যারা করোনা নেগেটিভ সনদ এবং দুটি টিকার সনদ নিয়ে ফিরেছেন এমন ৪০ হাজার ৮৭৯ জনকে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার সুযোগ দেয়া হয় এবং অবশিষ্ট ৮ হাজার ২৯৭ জনকে বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।
সূত্র জানায়, ৩০ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো মোট ৪০ হাজার ৮৭৯ জন যাত্রীর মধ্যে প্রতিদিনের হিসেবে যাত্রী সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ৭৭৩ জন, ১ হাজার ৯৯২ জন, ২ হাজার ১০ জন, ২ হাজার ৩১৫ জন, ৩ হাজার ২৪৬ জন, ৩ হাজার ৫৩৯ জন, ৩ হাজার ৭৩৪ জন, ৪ হাজার ২৪১ জন, ৩ হাজার ৪২৪ জন, ৩ হাজার ৭৯৪ জন, ৩ হাজার ২২৪ জন, ৩ হাজার ৭১৮ জন এবং ৩ হাজার ৮৬৯ জন।
এ সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো যাত্রী সংখ্যা যথাক্রমে ১ হাজার ৭৬ জন, ৭৪৩ জন, ৫৪৮ জন, ৫২৪ জন, ৫৬৭ জন, ৬২৩ জন, ৫২৫ জন, ৬৩৭ জন, ৭৪৪ জন, ৪৮৭ জন, ৭২৭ জন, ৫৭৮ জন এবং ৫১৮ জন।
বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বৃহস্পতিবার (১৩ মে) জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আপস করা হচ্ছে না। এ নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা থাকলেও আমাদের কিছুই করার নেই। কোনো যাত্রী যদি রোগী হন বা জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র দেখানো সাপেক্ষে তাদের হাসপাতালে পাঠানোর সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে অনেকে নিজেকে মুমূর্ষু রোগী দাবি করলেও চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র দেখাতে পারছেন না।’
যাদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন শেষ হয়েছে তারা ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে যেতে পারবেন। তবে অধিকাংশ বিদেশফেরত যাত্রীকে করোনাজনিত কোয়ারেন্টাইনের বাধ্যবাধকতার সরকারি নির্দেশের কারণে হোটেল বা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই ঈদ করতে হবে।
ক্রিকেটার সাকিব ও মোস্তাফিজ রাজধানীর ভিন্ন ভিন্ন দুটি আবাসিক হোটেলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। তাদের মেয়াদ ঈদের দুই-তিন দিন পর শেষ হবে। ফলে বিশেষ বিবেচনায় তাদের ছাড়পত্র না দেয়া হলে তাদেরও হোটেলেই ঈদ করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, ‘আমাদের কাজ বিমানবন্দর থেকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো। এরপরের কাজটি অন্য সংস্থা করে থাকে।’
সুতরাং এ দুজনের বিষয়ে তার জানা নেই বলে মন্তব্য করেন।
এমইউ/এমএইচআর/এমকেএইচ