‘৪০ হাজার খরচ করে ১০ হাজার টাকার ত্রাণ দেওয়া হয়েছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:০২ পিএম, ০৪ জুলাই ২০২২

স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বন্যা পুনর্বাসন কর্মসূচি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে ত্রাণ দেওয়া হলে এ কার্যক্রম আরও বেশি কার্যকর হবে। তারা বলেন, ১০ হাজার টাকার ত্রাণ দিতে ৪০ হাজার খরচ করা হচ্ছে।

সোমবার (৪ জুলাই) প্রায় ৭০০ জাতীয় ও স্থানীয় এনজিও এবং সুশীল সমাজ সংগঠনের নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ সিএসও এনজিও কো-অর্ডিনেশন প্রসেস (বিডিসিএসও) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তারা।

বিডিসিএসও সিলেট বিভাগের সভাপতি তোফাজ্জল সোহেল বলেন, জাতিসংঘসহ কয়েকটি সংস্থা সম্প্রতি বন্যায় আক্রান্ত এলাকার ক্ষয়ক্ষতির ওপর একটি সমীক্ষা চালিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পাশাপাশি তারা বন্যাপরবর্তী পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয়তাও যাচাই করেছে। সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোরও মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

তিনি আরও বলেন, আমরা সব সময়ের মতো এই বন্যায় স্থানীয় মানুষ ও স্থানীয় সংস্থাগুলোর ভূমিকায় অনুপ্রাণিত। আমরা মনে করি, তাদের এই ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়ে স্থানীয় সংস্থাগুলোর মাধ্যমেই বন্যাপরবর্তী পুনর্বাসন কর্মসূচি বাস্তবায়নে তহবিল দেওয়া উচিত। কারণ তারা স্থানীয় মানুষের প্রয়োজন সবচেয়ে ভালো বোঝেন।

‘এর ফলে তাদের দিয়ে কর্মসূচির বাস্তবায়ন অধিকতর কার্যকর হতে পারে। ভবিষ্যতে যেকোনো দুর্যোগে তাদের দ্রুত সময়ে কার্যকরভাবে পাওয়া যাবে। স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যয়ও তুলনামূলক কম।’

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জহিরুল হক শাকিল বলেন, আমি দেখেছি, একজন ৪০ হাজার খরচ করে ১০ হাজার টাকার ত্রাণ নিয়ে এসেছেন। অথচ একটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান এই ত্রাণ দিলে পুরো ৫০ হাজার টাকাই সহায়তা দিতে পারতো। আমাদের বৈশ্বিক বাস্তবতার আলোকে ভাবতে হবে। কিন্তু কাজটা করতে হবে স্থানীয় বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে।

দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, এখন স্থানীয় পুনর্বাসনের জন্য কী প্রয়োজন তার একটি চাহিদা নিরূপণ করা খুবই জরুরি। এই চাহিদাটা যাচাই করতে হবে স্থানীয় এলাকায় গিয়ে এবং স্থানীয় সংস্থাগুলোকে নিয়েই সেটি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে এখন জরুরিভিত্তিতে হাওড় অঞ্চলে বন্যায় বাস্তুচ্যুত মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। এটা শুধু একটা বন্যা নয়, এটা জলবাদ্ধতা, এর প্রভাব ব্যাপক। প্রতিটি জেলায় জনসচিব পর্যায়ের একজন ত্রাণ কমিশনার নিয়োগ করা খুবই জরুরি।

বিডিসিএসও’র জাতীয় সমন্বয়কারী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তহবিল সংগ্রহ, কারিগরি সহায়তা ও মনিটরিংয়ে তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকেই বাস্তবায়ন করতে হবে। আর পুরো প্রক্রিয়া সমন্বয় করতে হবে সরকারকে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিডিসিএসও সিলেট বিভাগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম। এতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিডিসিএসও সিলেট বিভাগের সভাপতি তোফাজ্জল সোহেল।

এসএম/এমপি/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।