এক মাসেও সন্ধান মিলেনি কিশোরী শাবনূরের
কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালীতে রহস্যজনকভাবে এক কিশোরী এক মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছে। সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজ করে না পেয়ে চরম উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন কিশোরীর পরিবার। নিখোঁজ কিশোরীর নাম রেশমা আকতার শাবনূর (১৪)। সে ভারুয়াখালীর চৌচুল্লা মুরা এলাকার ওসমান সরোয়ারের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, মাস খানেক আগে ভারুয়াখালীর চৌচুল্যা মুরা এলাকার ওসমান সরওয়ারের মেয়ে রেশমা আক্তার শাবনূরকে একই এলাকার প্রবাসী ছাবের আহমদের স্ত্রী ইসমত আরা তার বাড়িতে নিয়ে যান। বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ইসমত আরা তার আত্মীয় কক্সবাজারের টেকপাড়ার প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী পারভীন আক্তারের কাছে শাবনূরকে রেখে আসে। রহস্যজনক এ ঘটনা শাবনূরের বাবা-মা জানার পর ইসমত আরাকে মেয়ে হাজির করতে বলে। তখনই আসল রহস্য প্রকাশ করেন ইসমত।
তিনি তাদের (শাবনূরের বাবা-মাকে) জানায়, শাবনূর চট্টগ্রাম শহর থেকে হারিয়ে গেছে। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো খবরে ওসমান কান্নাকাটি করে ইসমতের কাছে মেয়ের সন্ধান চান। নিরূপায় হয়ে ইসমত চট্টগ্রামের মাঈনুল নামের এক ব্যক্তির ঠিকানা দিয়ে সেখানে শাবনূরের খোঁজ নিতে বলে। দিশেহারা ওসমান তার দেয়া ঠিকানামতে চট্টগ্রাম গিয়ে মাঈনুলকে ধরে মেয়ের অবস্থান জানাতে অনুরোধ করেন। জবাবে মাঈনুল তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন শাবনূরের বাবা। উপায়ন্তর না দেখে ওসমান এলাকায় চলে আসেন। পরে এলাকার সচেতন কয়েক ব্যক্তির কথা অনুসারে মেয়ের সন্ধান চেয়ে ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে। এতে ঘটে বিপত্তি। চতুর ইসমত আরা তার বান্ধবী পারভীন আক্তারকে বাদী বানিয়ে নিখোঁজ শাবনূরের অসহায় স্বজনদের আসামি করে কক্সবাজার মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করে। বিষয়টি প্রকাশ পেলে কিশোরী নিখোঁজের ঘটনায় তোলপাড়ের পাশাপাশি এলাকাবাসীর মাঝে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। তারা শাবনূর নিখোঁজে দায়ী ইসমত আরা ও তার বান্ধবী পারভীনের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
এদিকে মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় শোকে বিহ্বল হয়ে শয্যাশায়ী হয়েছেন শাবনূরের মা। তাকে নিয়ে চরম বেকায়দায় রয়েছে পরিবারের সবাই। অপরদিকে, মামলার খবর পেয়ে কিশোরীর স্বজনরা চরম উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন।
শাবনূরের বাবা ওসমান বলেন, মামলা মোকদ্দমা আমি বুঝি না। আমি খেটে খাওয়া মানুষ। আমি আমার আদরের মেয়েকে ফেরত চায়।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত ইসমত আরা তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ওসমানের মেয়ে শাবনূরকে তিনি তার বান্ধবী পারভীনের কাছে গৃহকর্মী হিসেবে দিয়েছিলেন। পরে পারভীনের সঙ্গে শাবনূর চট্টগ্রামস্থ মাঈনুলের বাসায় বেড়াতে গেলে সেখান থেকে ১৮ জানুয়ারি নিরুদ্দেশ হয়। এ ঘটনায় তিনিও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন বলে জানান ইসমত। তবে ওসমানদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।
কক্সবাজার মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, বিষয়টি কেউ অবগত করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করে থাকলে তাও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে দেখা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সায়ীদ আলমগীর/এসএস/এমএস