২৫ দেশকে পেছনে ফেলে জিডিপিতে ৩৫তম বাংলাদেশ: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৪ পিএম, ০৯ জানুয়ারি ২০২৩
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ২০০৯ সালে আমাদের সরকার গঠনের সময় বাংলাদেশ ছিল ৬০তম অর্থনীতির দেশ, গত ১৪ বছরে ২৫ দেশকে পেছনে ফেলে আজকে সেটি ৩৫তম অর্থনীতির দেশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বদলে গেছে এবং বদলে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া জিডিপির আকারে আমাদের চেয়ে ছোট অর্থনীতির দেশ, পাকিস্তান তো বটেই। কোনো কোনো সমীক্ষামতে বাংলাদেশের অবস্থান পিপিপিতে ৩১তম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে, সাড়ে ৯ শতাংশের বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যদি অব্যাহত থাকতো তাহলে দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া এমনকি সিঙ্গাপুরের আগেই পৃথিবীর মানুষ বাংলাদেশের বদলে যাওয়ার গল্প শুনতো।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের জহির রায়হান হলে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী ‘বঙ্গবন্ধু চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৩’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) এ উৎসবের আয়োজন করেছে।

আরও পড়ুন: ১৪ বছরের আর্থ-সামাজিক অবস্থা তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) প্রকাশিত ‘দি টপ হেভি গ্লোবাল ইকনোমি’ তালিকায় ৩৫তম অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আজকে এই খবরে দেশের গণমাধ্যমে যেভাবে প্রশংসা হওয়া দরকার আমি কিন্তু সেটা দেখছি না। যদি বাংলাদেশ কোনো সূচকে পিছিয়ে যায়, তখন গণমাধ্যমে সেটি যেভাবে ফলাও করে প্রচার হয়। কিন্তু অর্থনীতির আকার অনুযায়ী, জিডিপির হিসাব অনুযায়ী আমরা যখন এগিয়ে গেলাম, সেটিও ফলাও করে প্রচার হওয়া প্রয়োজন।

গত বছরের অসামান্য অর্জনের চিত্র তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, ২০২২ সালে পৃথিবীর জন্য একটি দুঃসময় কেটেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছে গত বছর এবং কোনো কোনো দেশে করোনা মহামারি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সেই পরিস্থিতির মধ্যে নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করে প্রধানমন্ত্রী সেটি উদ্বোধন করেছেন, ঢাকায় মেট্রোরেলের যাত্রা শুরু হয়েছে।

বিদেশি গণমাধ্যমে দেশের উচ্ছ্বসিত প্রশংসার উদাহরণ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা ঢাকায় মেট্রোরেল শুরু হওয়ার পর একটি ফিচারে লিখেছে, ‘ঢাকার মেট্রোরেল আমাদের অনেক পরে শুরু হলেও আধুনিকতার দিক দিয়ে কলকাতার চেয়ে এগিয়ে। এবং তিন দশক পরও কলকাতায় মেট্রোরেলে কোনো নারী চালক নেই। আর ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল একজন নারী চালিয়েছেন এবং ৬ জন চালক নারী। অর্থাৎ দেশের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে এখানে নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে।’

আরও পড়ুন: এফডিসিতে বঙ্গবন্ধু চলচ্চিত্র উৎসব

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে তিনি বলেন, একাত্তর সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় লাভ করলেও আমাদের স্বাধীনতা তখনও পূর্ণতা পায়নি। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি যিনি হাজার বছরের ঘুমন্ত বাঙালির জাতিসত্তার উন্মেষ ঘটিয়ে ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’ স্লোগান শিখিয়েছেন, এক সাগর রক্ত পাড়ি দিয়ে যার নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা এসেছে, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি সেই বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তনেই আমাদের স্বাধীনতা সত্যিকার অর্থে পূর্ণতা পেয়েছিল।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ভিডিওতে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধুর বাবা শেখ লুৎফর রহমান এক কোনায় বসে আছেন, আর ছেলে বঙ্গবন্ধু মুজিব জনতার কাছে। কারণ জাতির পিতা মুজিব তখন শুধু শেখ লুৎফর রহমানের সন্তান নন, তিনি জনগণের মুজিব। এটিই হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু।

আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরায় বিজয়ের পূর্ণ আনন্দ পেয়েছিল জাতি: শারফুদ্দিন

জাতীয় জীবনে চলচ্চিত্রের ভূমিকার কথা বর্ণনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের চলচ্চিত্র যেন সমাজের অসঙ্গতি দূর করে দেশটাকে স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে সহায়তা করে। বিনোদন দেওয়ার পাশাপাশি সমাজকে পরিশুদ্ধ, পরিশীলিত করার জন্য যেন ভূমিকা রাখে, আজকের দিনে সেটিই আমার প্রত্যাশা।

বাচসাস সভাপতি রাজু আলীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, চলচ্চিত্র অভিনেত্রী অরুনা বিশ্বাস এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ বক্তব্য রাখেন।

আইএইচআর/ইএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।