দেশের প্রথম পাতাল রেলের কাজ শুরু ২ ফেব্রুয়ারি
অবসান ঘটতে চলছে দেশের প্রথম পাতালপথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের অপেক্ষার। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাতাল রেললাইন নির্মাণকাজের ফলক উন্মোচন করবেন বলে জানিয়েছে মেট্রোরেল নির্মাণ কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে ২৬ জানুয়ারি পাতাল মেট্রোরেলের কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা পরিবর্তন হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে কুড়িল, নদ্দা, বাড্ডা ছুঁয়ে কমলাপুর পর্যন্ত ছুটবে দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল।
আরও পড়ুন>> দেশের প্রথম পাতাল রেলের কাজ শুরু শিগগির, পরিবেশে সর্বোচ্চ গুরুত্ব
ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (লাইন-১) আওতায় পাতাল রেললাইন নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় থেকে রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জ ডিপো নির্মাণের মাধ্যমে প্রাথমিককাজ শুরু হবে। প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আবুল কাসেম ভূঁঞা জাগো নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন>> বিমানবন্দর-কমলাপুর রুটে পাতাল রেল নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণ চুক্তি
আবুল কাসেম ভূঁঞা বলেন, দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোর কাজ ২৬ জানুয়ারি শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে, দিনটি পরিবর্তন করে ২ ফেব্রুয়ারি করা হয়েছে। ওই দিনে পাতাল রেললাইন নির্মাণকাজের ফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর মাধ্যমেই মূলত প্রকল্পের অবকাঠামোগত কাজ শুরু হবে।’
২০৩০ সালের মধ্যে রাজধানী ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) অধীনে ছয়টি মেট্রোরেল (এমআরটি) নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে। যাতে রাজধানীজুড়ে ১২৯ দশমিক ৯০১ কিলোমিটার মেট্রো রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে এলিভেটেড লাইন হবে ৬৮ দশমিক ৭২৯ কিলোমিটার এবং ভূ-গর্ভস্থ লাইন (পাতালপথে রেললাইন) হবে ৬১ দশমিক ১৭২ কিলোমিটার। রাজধানীজুড়ে থাকবে ১০৫টি স্টেশন। যার মধ্যে ৫২টি থাকবে উপরে এবং ৫৩টি পাতালে। এ পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ দিতেই শুরু হচ্ছে অবকাঠামো নির্মাণকাজ। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রেললাইন মাটির নিচে নির্মিত হবে। এটিই মেট্রোরেলের প্রথম পাতাল যাত্রা। মেট্রোরেলের এ অংশ মাটির নিচ দিয়ে চলবে বলে পাতাল রেল নামে পরিচিতি পাচ্ছে।
আরও পড়ুন>> পাতাল রেল নির্মাণে ‘ধীরে চলো নীতি’কে স্বাগত জানিয়েছে আইপিডি
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ডিএমটিসিএল বলছে— এ পর্বে এমআরটি লাইন-১ এর আওতায় পাতাল ও উড়ালপথসহ ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হবে। এ পথে থাকবে দুটি রুট। একটি বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত, যার দৈর্ঘ্য হবে ২০ কিলোমিটার। এ রুটে ১২টি পাতাল স্টেশন থাকবে। বিমানবন্দর-কমলাপুর রুটই হবে দেশের প্রথম পাতাল রেলপথ। এটিও উত্তরা-আগারগাঁও রুটে চলাচলকারী মেট্রোরেলের আদলে বিদ্যুতে চলবে। নিয়ন্ত্রণ করা যাবে দূর থেকেই।
আরও পড়ুন>> পদ্মা সেতু রেল প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৩ শতাংশ: রেলমন্ত্রী
আর দ্বিতীয়টি হবে নতুন বাজার থেকে পিতলগঞ্জ ডিপো পর্যন্ত। যাকে পূর্বাচল রুট বলা হবে। দ্বিতীয় অংশের দৈর্ঘ্য ১১ কিলোমিটার। এর পুরোটাই উড়ালপথ। এ পথে স্টেশনের সংখ্যা নয়টি। পাতাল-উড়াল মিলিয়ে প্রতিটি স্টেশনে ট্রেন থামবে প্রতি আড়াই থেকে সাড়ে তিন মিনিট পরপর। এই ৩১ কিলোমিটার পথে চলবে ২৫টি ট্রেন। যার প্রতিটিতে একবারে তিন হাজারের বেশি যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা থাকবে।
পাতালপথে কমলাপুর, রাজারবাগ, মালিবাগ, হাতিরঝিল, রামপুরা, পূর্ব হাতিরঝিল, বাড্ডা, উত্তর বাড্ডা, নতুন বাজার, নদ্দা, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ ও বিমানবন্দরে স্টেশন থাকবে। প্ল্যাটফর্মে ওঠা-নামার জন্য উভয়পথের স্টেশনে থাকবে লিফট, সিঁড়ি ও এস্কেলেটর (চলন্ত সিঁড়ি)। তথ্যানুযায়ী, নতুন বাজার স্টেশনে এমআরটি লাইন-৫ নর্দান রুটের সঙ্গে আন্তঃলাইন সংযোগ থাকবে। নদ্দা, ও নতুন বাজার স্টেশন আন্তঃসংযোগ রুট ব্যবহার করে বিমানবন্দর রুট থেকে পূর্বাচলে যাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন>> পাতাল রেল: জাপানের সঙ্গে ১১৪০০ কোটি টাকার ঋণচুক্তি
এমওএস/এমএএইচ/এমএস