পাতাল রেল নির্মাণে ‘ধীরে চলো নীতি’কে স্বাগত জানিয়েছে আইপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:০২ পিএম, ১২ মে ২০২২
ফাইল ছবি

রাজধানীতে পাতাল রেল (সাবওয়ে) প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার ‘ধীরে চলো নীতি’ গ্রহণ করায় স্বাগত জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)। বৃহস্পতিবার (১২ মে) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

বিবৃতিতে বলা হয়, পাতাল রেল প্রকল্প সংক্রান্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে আইপিডির পক্ষে বলা হয়েছিল পাতাল রেল প্রকল্প ঢাকা নগরীর আর্থসামাজিক-পরিকল্পনাগত বিবেচনায় ব্যয়বহুল, উচ্চাভিলাষী ও অপরিণামদর্শী। সম্প্রতি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর ঢাকায় পাতাল রেল নির্মাণে ‘ধীরে চলো নীতি’ গ্রহণে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তকে আইপিডি স্বাগত জানাচ্ছে।

এতে আরও বলা হয়, পাতাল রেল প্রকল্পের মত ব্যয়নির্ভর, ঝুঁকিপূর্ণ ও উচ্চাভিলাষী প্রস্তাবনা নিয়ে পরিকল্পনা করার জন্য ঢাকা নগরী এখনও প্রস্তুত নয়। বরং ঢাকার যানজট সমস্যা নিরসনসহ টেকসই পরিবহন পরিকল্পনা গড়ে তুলতে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (এসটিপি), সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (আরএসটিপি), ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার।

আইপিডি মনে করে, পাতাল রেল প্রকল্প নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া ‘ধীরে চলো নীতি’র মাধ্যমে নাগরিকদের মতামতকে সম্মান দেওয়া হয়েছে। যা সরকারের জন্য ইতিবাচক সিদ্ধান্ত এবং উন্নয়ন পরিকল্পনায় টেকসই ভাবনা বলে বিবেচনা করা যেতে পারে। এই প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে উচ্চ ব্যয় সম্পন্ন পরিবহন ও যোগাযোগ প্রকল্প গ্রহণের আগে গণশুনানির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মতামতে গুরুত্ব দিলে সরকারের জন্য জনবান্ধব ও কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সহজ হবে।

ঢাকায় পাতাল রেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যে ৩২১ কোটি টাকার সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা প্রায় শেষের পথে। এ বিষয়ে আইপিডি জানায়, এর আগে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে দ্রুতগতির বুলেট ট্রেন করতে ১১০ কোটি টাকার সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা শেষে প্রকল্পটিকে বাস্তববায়নের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। একই পরিণতি হয়েছে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে উড়াল এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক পথ নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ৯৮ কোটি টাকার, যেই প্রকল্প পরবর্তীতে বাতিল হয়ে যায়। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর প্রকল্প লাভজনক বলে বিবেচিত না হলে প্রকল্প অনুমোদন না দেওয়ার বিষয়টি সরকার ও রাষ্ট্রের জন্য ইতিবাচক। এতে ব্যয়বহুল ও উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থ ও সম্পদের অপচয় থেকে রাষ্ট্র রক্ষা পায়।

অন্যদিকে এই ধরনের ব্যয়বহুল ও আমাদের আর্থসামাজিক-পরিকল্পনাগত বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যবিহীন প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে গিয়ে রাষ্ট্রের ও জনগণের মূল্যবান অর্থের অপচয় হচ্ছে। এই ব্যাপারে রাষ্ট্র ও সরকারের গভীর দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে আইপিডি মনে করে। এই ধরনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নামে কারও অনৈতিক উদ্দ্যেশ্য ও অর্থ যোগ হচ্ছে কি না, তারও নির্মোহ বিশ্লেষণ রাষ্ট্রের করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে এই ধরনের উচ্চাভিলাষী উন্নয়ন পরিকল্পনার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পূর্বে দেশের পেশাজীবী ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা ও প্রাক-সম্ভাব্যতা বিশ্লেষণ (প্রি ফিসিবিলিটি স্টাডি) করলে এই ধরনের অর্থের অপচয় এড়ানো যাবে বলেও আইপিডি মনে করে।

এমএমএ/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।