বীরের কণ্ঠে বীরত্বগাঁথা
নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শুরু হয়েছে বীরের কণ্ঠে বীরত্বগাঁথা। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনানো ভিত্তিক কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইহিতাস পৌঁছে দিতে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে নিজেকে একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বীরের কণ্ঠে বীরত্বগাঁথা অনু্ষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনালেন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা রনবিক্রম ত্রিপুরা।
রক্তঝরা মহান স্বাধীনতার মাসকে সামনে রেখে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মাসব্যাপী বীরের কণ্ঠে বীরত্বগাঁথা কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা ১১টার দিকে মাটিরাঙ্গা মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুলে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা রনবিক্রম ত্রিপুরা।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মনছুর আলী, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামছুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কাশেম, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. আলাউদ্দিন লিটন, মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিযন পরিষদ চেযারম্যান হিরনজয় ত্রিপুরা, মাটিরাঙ্গা মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা রনবিক্রম ত্রিপুরা অংশগ্রহণ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতার বর্ণানা তুলে ধরে বলেন, যে কোনো যুদ্ধকেই ঘৃণা করতে হবে, আমিও যুদ্ধকে ঘৃণা করি। পাকিস্তানিরা আমাদের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল। আর তাই সেদিন স্বাধীনতার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এদেশের মুক্তিকামী মানুষ।
মুক্তিযুদ্ধের নানা গল্প তুলে ধরে তিনি বলেন, সেদিন দেশ মাতৃকার প্রয়োজনে আমরা যুদ্ধ করেছি। দীর্ঘ নয় মাসের সংগ্রাম শেষে স্বাধীনতাও পেয়েছি। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের যে অর্জন তা রক্ষা করার দায়িত্ব তোমদেরই।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামের নারীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি এ অঞ্চলের বিভিন্ন নারীর নির্মম কাহিনী তুলে ধরেন। নারীরা মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতে গিয়ে পাকিস্তানিদের নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন। ৭১ সালে নারীরা দেশ ও সমাজকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুরুষরা যুদ্ধে গিয়েছিল আর নারীরা সবকিছু আগলে রেখেছিলেন। কিন্তু এ দেশে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। গণহত্যা হয়নি বলে অস্বীকার করা হচ্ছে।
এআরএ/এবিএস