বড় বোনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি: একা পেয়ে ছোট বোনকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

শিশুর বয়স নয় বছর। ১৪ মার্চ সন্ধ্যায় বড় বোনের সঙ্গে ঘুরতে বের হয় সে। ঘুরতে ঘুরতে বোনের সঙ্গে রাত ৮টার দিকে মোহাম্মদপুরের টাউনহল এলাকায় যায়। কিন্তু সেখানে তার বড় বোনের সঙ্গে হয় কথা কাটাকাটি। এসময় বড় বোন রাগ করে শিশুটিকে ফেলে অন্য বান্ধবীদের সঙ্গে চলে যান।
তখন ওই শিশু একা একা হেঁটে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের দিকে যায়। আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিশুটিকে দেখেন সিএনজি অটোরিকশাচালক সেলিম। এসময় তিনি ও তার সহযোগী শিশুকে ফুসলিয়ে সিএনজিতে তোলেন। এরপর তাকে জোর করে ঢাকা উদ্যানের একটি লেগুনাস্ট্যান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বাবার জানাজায় না গিয়ে ভাতিজিকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলল চাচা
পুলিশ জানায়, এসময় শিশুটি চিৎকার করলে তার মুখ চেপে ধরা হয়। এরপর প্রথমে সেলিমের সহযোগী ধর্ষণ করেন শিশুটিকে। পরে ধর্ষণ করেন সেলিম। এরপর সেই সহযোগী পুনরায় শিশুকে ধর্ষণ করেন। উপর্যুপরি ধর্ষণের ফলে গুরুতর অসুস্থ হয় ওই শিশু। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।
বুধবার (২২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর শ্যামলীতে নিজ কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।
এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত সেলিমকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার মধ্যরাতে রাজধানীর বাড্ডা থানার খালপাড় হাজীপাড়া রোড এলাকার একটি গ্যারেজে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তার সহযোগী পলাতক। পুলিশ তার নাম জানায়নি।
আরও পড়ুন: ‘প্রতারণা করে পরিদর্শককে ধর্ষণ করেন এসপি মোক্তার’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ধর্ষণের পর শিশুটিকে ছেড়ে দিলে সে হেঁটে হেঁটে শিয়া মসজিদ এলাকায় গেলে বড় বোনের সঙ্গে তার দেখা হয়। এসময় বোন তাকে দ্রুত শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুর অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে পাঠান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বর্তমানে সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় শিশুর বাবা বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি মামলা করেছেন।
পুলিশ জানায়, মামলার পর ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একটি সন্দেহজনক সিএনজি চিহ্নিত করা হয়।
আরও পড়ুন: কঠোর শাস্তির বিধান কি ধর্ষণ প্রবণতা কমাবে?
এছাড়া ভুক্তভোগীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী ঢাকা উদ্যান, নবোদয় হাউজিং, শিয়া মসজিদ, তাজমহল রোড, ইকবাল রোড এলাকার ২৩টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে শনাক্ত করা হয় সিএনজির নম্বর। পরবর্তীতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শনাক্ত করা হয় সিএনজিচালকের অবস্থান। এরপর অভিযান চালিয়ে সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়।
উপ-পুলিশ কমিশনার জানান, সেলিমের সহযোগী পলাতক রয়েছেন। তার বিস্তারিত নাম-পরিচয় পেয়েছি। তাকে ধরতে অভিযান চলছে।
টিটি/জেডএইচ/জিকেএস