রফিক আজাদ ছিলেন প্রকৃত দেশপ্রেমিক


প্রকাশিত: ০১:৫৩ পিএম, ১২ মার্চ ২০১৬
ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক ছাত্র, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট কবি রফিক আজাদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

শনিবার বিকেলে এক বাণীতে এ শোক প্রকাশ করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, আশৈশব রফিক আজাদ দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের নানা আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। তার মৃত্যুতে দেশ একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিককে হারালো।

তিনি বলেন, রফিক আজাদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে তিনি এক নিজস্ব রচনাশৈলী তৈরি করেছিলেন। কবি হিসেবে তার লেখা তরুণদের মাঝে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।

উপাচার্য মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের শোক-সন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

প্রসঙ্গত, রফিক আজাদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার অপরাহ্নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।

রফিক আজাদ ১৯৪১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার গুণী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি অভিভাবকদের শাসন উপেক্ষা করে তিনি ভাষা শহীদদের স্মরণে প্রভাতফেরীতে অংশ নেন। রফিক আজাদ ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে কাদের সিদ্দিকীর সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমিতে ‘উত্তরাধিকার’ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাদেশ জুট মিল কর্পোরেশন, বিরিশিরি উপজাতীয় কালচারাল একাডেমি এবং জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সাপ্তাহিক রোববারে সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেছেন।

কবি রফিক আজাদ ভাষা ও সাহিত্য কর্মে অবদানের জন্য ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ২০১৩ সালে রাষ্ট্রীয় একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়াও হুমায়ুন কবীর স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭৭), আলাওল পুরস্কার (১৯৮১), কবিতালাপ পুরস্কার (১৯৭৯), সুহৃদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৯), কবি আহসান হাবীব পুরস্কার (১৯৯১), কবি হাসান হাফিজুর রহমান পুরস্কার (১৯৯৬) এবং ১৯৯৭ সালে বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা লাভ করেন।

রফিক আজাদের প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে আছে: অসম্ভবের পায়ে (১৯৭৩), সীমাবদ্ধ জলে সীমিত সবুজে (১৯৭৪), নির্বাচিত কবিতা (১৯৭৫), চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া (১৯৭৭) প্রভৃতি।

রফিক আজাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অকাল প্রয়াত মেধাবী ছাত্রী নভেরা দীপিকার বাবা।

এমএইচ/একে/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।