নৌকা-ধানের স্লোগানে মুখর ব্রাহ্মণবাড়িয়া


প্রকাশিত: ০৫:১৯ এএম, ১৪ মার্চ ২০১৬

‘২০ তারিখ সারাদিন নৌকা মার্কায় ভোট দিন’, ‘৭-৮-৯ ধানের শীষ মার্কার হবে জয়’, ‘১০-১১-১২ সিল মারো ভাই সিল মারো’- এমন নানা স্লোগানে এখন মুখরিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহর। আগামী ২০ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের পাশাপাশি ভোটারদের মাঝেও আমেজ ছড়িয়েছে।

গত ৫ মার্চ প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর থেকেই প্রচার-প্রচারণায় মাঠে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনকে ঘিরে পৌরশহরের প্রতিটি পাড়া-মহল্লার অলি-গলি সব খানেই শোভা যাচ্ছে প্রার্থীদের পোস্টার। এছাড়া সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে মাইকিং করেও চলছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা।

কে হচ্ছেন পৌরসভার মেয়র? আওয়ামী লীগ নাকি বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এ নিয়ে পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানগুলোতে ওঠছে ঝড়। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে প্রার্থীদের নিয়ে চলে ভোটারদের চুলচেরা সব বিশ্লেষণ।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মিসেস নায়ার কবির, বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি। এছাড়াও নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে মো. আনিছ খান, ইসলামী ঐক্যজোটের মনোনয়ন নিয়ে মাওলানা মো. ইউসূফ ভূইয়া ও ইসলামী শাষনতন্ত্র আন্দোলনের মনোনয়ন নিয়ে লড়ছেন মো. সিরাজুল ইসলাম ভূইয়া।

নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন দিন-রাত জনসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন সব মেয়র প্রার্থী। তারা ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে গিয়ে ভোট চাইছেন, বিনিময়ে ভোটারদের উন্নয়নে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। তবে প্রচারণায় দৌড়-ঝাঁপে পিছিয়ে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। পৌরসভার ১২টি সাধারণ ও ৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের বিপরীতে ৭০ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে গত ১২ জানুয়ারি এক মাদরাসা ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরজুড়ে বিক্ষুব্ধ মাদরাসা ছাত্রদের চালানো তাণ্ডবের পর প্রথমবারের মতো পৌরসভা নির্বাচনে নারী মেয়র প্রার্থী দিয়ে মৌলবাদের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। নারী নেতৃত্বকে সামনে নিয়ে আসা এবং সাম্প্রতিক সময়ে জেলায় ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র পদে নারী প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে বলেও ইঙ্গিত দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

B-Barea

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মিসেস নায়ার কবির জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি আমার জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। যদি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে একটি আধুনিক ও সুন্দর পৌরসভা গঠনে নিরলসভাবে কাজ করে যাবো’। পাশাপাশি প্রথমবারের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় মেয়র পদে নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদও জানান তিনি।

তবে পুলিশের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানির অভিযোগ করে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি জাগো নিউজকে বলেন, দিনের আলোতে আমার দলীয় নেতাকর্মী যারা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে রাতের বেলা পুলিশ সেইসব নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হানা দিচ্ছে। তবে আগামী ২০ মার্চ ভোটাররা যদি স্বতর্স্ফূতভাবে ভোট দেন এবং নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তাহলে তিনি বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন। আর মেয়র নির্বাচিত হলে দলমত নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাকে একটি আধুনিক পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

পৌরসভার কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা হলে তারা জাগো নিউজকে বলেন, পৌরসভার অনেক রাস্তা-ঘাট এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক। পৌর এলাকায় ভালো কোনো বিনোদনের জায়গা নেই। এছাড়া মাদকের সমস্যাও রয়েছে। যারা সৎ, যোগ্য প্রার্থী এবং পৌর নাগরিকদের সব সমস্যা সমাধানে সমর্থ হবেন তাদেরই ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হবে।

উল্লেখ্য, আগামী ২০ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২ হাজার ৯৩৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫১ হাজার ২৭ জন ও নারী ভোটার ৫১ হাজার ৯১০ জন।

এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।