তাদের অপেক্ষা ক্যামেরার জন্য!


প্রকাশিত: ০৮:১৭ এএম, ১৪ মার্চ ২০১৬

`হেই সক্কালে আইয়া দাঁড়াইয়্যা আছি। আর পারতেছি না। ঘুমে চোখ ঢুলঢুলু। মধ্যরাতে আইয়া রাস্তা ঝাড়ু দিয়া এনে আইছি। বইতেও দিতাছে না। বইলেই স্যারেরা আইয়া রাগ করেন।`  
 
বলছিলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মী কুলসুম বেগম। বয়স ষাটের কাছাকাছি। পরনে প্রিন্টের ময়লাযুক্ত সুতি শাড়ি। শাড়ির ওপরে সিটি কর্পোরেশনের দেয়া গাউন। থাকেন হাজারীবাগ সুইপার কলোনিতে। মাসিক আট হাজার টাকায় অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি করছেন প্রায় দুই দশক ধরে। শুরুতে মাইনে ছিল বর্তমান মাইনের চেয়ে অনেক কম।

Camera

সোমবার রাত ২টায় ঘুম থেকে ওঠে সচিবলয়ের সামনের রাস্তা ঝাড়ু দিয়েছেন। কাজ শেষ হয়েছে সকাল আটটায়। তবুও আজ ছুটি মেলেনি কুলসুমের।

সকাল ১১টায় টলিফোন ভবন মাঠে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের পরিচ্ছন্ন কর্মসূচিতে যোগ দেয়ার কথা। অনুষ্ঠানে মেয়র এলেন নির্ধারিত সময়ের পরে। সঙ্গে এলেন সাংবাদিকরাও।

সাংবাদিকদের ক্যামেরা দেখেই পরিচ্ছন্নকর্মীদের মেজাজ ফুরফুরে হয়ে ওঠলো। কারো কারো মুখে হাসির ঝলক। যেন দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। মেয়রকে কাছে পাবে আর সাংবাদিকরা ছবি তুলবে এ ভাবনাতেই অনেকে ফিসফিস করতে লাগলেন।

পরিচ্ছন্নকর্মী কুলসুম বলেন, `আমাদের দিয়ে ছবি তোলা হবে বলে সকাল থেকে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। ঘুমে পড়ে যাচ্ছি। এমন রোদের মধ্যে আর কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যায়?

Camera

পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা অপর পরিছন্নকর্মী সোহেল। মধ্যরাতে এসেছেন পরিচ্ছন্নতার কাজে। মেয়রের পরিষ্কার কর্মসূচির কারণে তারও বাসায় যাওয়া হয়নি। তিন বলেন, আমাদের ছবি তোলা হবে বলে সকাল থেকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। বসতেও পারছি না।`

অবশেষে মেয়র ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে পরিচ্ছন্ন কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন। শরীক হলেন সিটি কর্পোরেশন আর বিটিসিএল এর কর্মকর্তারাও। তবে ক্যামেরার ফ্রেমে আর জায়গা হলো না সকাল থেকে দাঁড়িয়ে থাকা অর্ধশত পরিচ্ছন্নকর্মীদের।

এএসএস/এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।