চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধার সম্ভব হলেও সময় লাগবে


প্রকাশিত: ০৬:০৭ এএম, ১৮ মার্চ ২০১৬

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধার সম্ভব হলেও তা অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার বলে মনে করছেন ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) অরগানইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মীর্জা আব্দুল্লাহেল বাকী। একইসঙ্গে এই টাকা উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, থিউরি বলে লুট হওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ উদ্ধার সম্ভব। এজন্য অনেক প্রসিডিউর মেইনটেইন (প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে) করতে হবে।

চুরি যাওয়া রিজার্ভ উদ্ধারের বিষয়ে জানতে শুক্রবার সকালে আব্দুল্লাহেল বাকীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগো নিউজকে এসব কথা বলেন।

বাকীর কথায় সময় লাগলেও অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে আশা দেখা গেলেও বিপরীত মত ফিলিপাইনের সিনেটর ও তদন্ত কমিটির সদস্য সেন সার্জিও ওসমেনার। চুরি যাওয়া রিজার্ভ উদ্ধারের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে মনে করেন তিনি।  

বাকী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ লুট হওয়ার প্রক্রিয়া অনেক দিনের। তা সিআইডির তদন্তাধীনে আসছে মাত্র দুই দিন। এই অল্প সময়েই অনেক দৌড়-ঝাপ করতে হয়েছে। অনেক তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে।

চুরির ঘটনা তদন্তের বিষয়ে রোববার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা- এফবিআই বৈঠক করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
 
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তদন্ত যাই হোক না কেন রিজার্ভ কিন্তু বেহাত হয়ে গেছে। তা উদ্ধার করতে গেলে চারটি দেশের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ করতে হবে। এজন্য সিআইডিকে ব্যস্ত হলে হবে না। কারণ অন্য চারটি দেশের সহযোগিতা নিয়েই আমাদের কাজ করে যেতে হবে।
 
লুট হওয়া রিজার্ভ আদৌ উদ্ধার সম্ভব কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তের যে থিওরি তাতে আশা করা যায় উদ্ধার সম্ভব। তবে বাস্তবে কতোটা সম্ভব তা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এফবিআইয়ের সঙ্গে আমাদের রোববার বৈঠক রয়েছে। আমরা এফবিআইয়ের কাছ থেকে সহযোগিতা নিতে পারি। তারা ইনফরমেশন ও তদন্তগত সহযোগিতা করতে পারলে অবশ্যই তা গ্রহণ করা হবে।
 
এরআগে গত ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় মতিঝিল থানায় অর্থ পাচার এবং তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করে বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা। মামলাটি পরে সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়।

ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে সঞ্চিত বাংলাদেশে ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা থেকে ৮শ কোটি টাকা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সরিয়ে নেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি ধামা চাপা দিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও ফিলিপাইনের একটি সংবাদ মাধ্যমে তা ফাঁস করে দেয়। মূলত ফিলিপাইনের কয়েকটি ক্যাসিনোর মাধ্যমে এ টাকা পাচার করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, চুরি যাওয়া অর্থের কিছু উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ফিলিপাইনের অর্থ পাচারবিরোধী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে বাকি অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

বিপুল পরিমাণ অর্থ চুরির এই ঘটনার জেরে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের পদ ছেড়েছেন ড. আতিউর রহমান। এদিকে রিজার্ভ লুটের এই ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের (আরসিবিসি) শাখা ব্যবস্থাপক মাইয়া স্যানটোস দেগুইতোকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল বলে দাবি তার।

জেইউ/এনএফ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।