চাই সচেতনতা, দায়িত্বশীলতা

এটা খুবই উদ্বেগজনক ব্যাপার যে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চলছে করোনা মহামারিকাল। এরমধ্যে ডেঙ্গর হানা যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। যে কোনো মূল্যে ডেঙ্গু প্রতিরোধে নিতে হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
বিগত কয়েক মাসের তুলনায় চলতি মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ১৫ দিনে আক্রান্ত হয়ে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা মোট ৪০ জন। এ নিয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮৯ জনে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ১৯৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৪৫ জন, মার্চে ২৭ জন, এপ্রিলে ২৫ জন, মে মাসে ১০ জন, জুনে ২০ জন, জুলাইয়ে ২৩ জন এবং চলতি মাসে আজ রোববার পর্যন্ত ৪০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে তাদের মধ্যে ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৬৮ জন।
প্রাণঘাতি করোনা সংক্রমণের মধ্যে মশার উৎপাত বাড়তি দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। বিপুল পরিমাণ বরাদ্দ থাকলেও দুই সিটি করপোরেশেন কেন মশা নিধনে ব্যর্থ সেটি এক বিরাট রহস্য। যদিও এবার মেয়রদ্বয় নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন। বাসা-বাড়িতে মশার লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানার বিধানও করা হয়েছে। মশার কামড়ে অতিষ্ঠ মানুষজন আশা করছে মশকনিধনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। নগরবাসীরা বলছেন দিনেও মশার হাত থেকে রেহাই নেই। অন্যদিকে সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দরজা-জানালা সব বন্ধ করে বদ্ধভাবে থাকতে হয়। অথচ মশকনিধনে দুই সিটি করপোরেশেনের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা।
এ-সংক্রান্ত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, গত ডেঙ্গু মৌসুমে (আগস্ট-নভেম্বর) মশার ভয়াবহতা রাজধানীবাসীর মধ্যে যে ভয় ঢুকিয়েছিল, তা এখনো কাটেনি বলা যায়। এর মধ্যে ফের রাজধানীতে বেড়ে গেছে মশার উপদ্রব। বাসাবাড়ি, দোকানপাট, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত সর্বত্রই মশার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে নগরজীবন। মশার এই উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় নগরবাসীকে তাড়া করছে গত ডেঙ্গু মৌসুমের ভয়।
মশা শুধু দুর্ভোগই সৃষ্টি করে না। ডেঙ্গু, জিকা ভাইরাসহ বিভিন্ন মরণঘাতী রোগের জীবাণুও বহন করে। এ জন্য মশার উপদ্রব বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে এডিস মশার সংখ্যা যাতে বৃদ্ধি না পায় এ লক্ষ্যে সিটি করপোরেশন সরকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। মানুষজনকে সচেতন করে তুলতে হবে। এ বিষয়ে নাগরিক সচেতনতাও গুরুত্বপূর্ণ। বাসাবাড়ির আঙিনা, ফুলের টব, ছাদের বাগান, ভবনের চৌবাচ্চা, এসি-ফ্রিজ থেকে জমা পানিতে মশার বংশ বিস্তার বেশি ঘটে। এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।
সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নানা সময় মশকনিধনের নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ হয় না। দিন দিন রাজধানীতে মশার উৎপাত বেড়েই চলেছে। মশক নিধনে তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। অথচ এ জন্য বাজেট রয়েছে। রয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত লোক। মশকনিধন নিয়ে কোনো ধরনের অবহেলা বা শৈথিল্য মেনে নেয়া যায় না।
এইচআর/পিআর