বৃষ্টিতে কারওয়ানবাজারে ভোগান্তি, পানিতে ভাসছে পণ্য
টানা দুইদিনের বৃষ্টিতে রাজধানীর অন্যতম পাইকারি বাজার কারওয়ানবাজার যেন এক জলাবদ্ধ দ্বীপে রূপ নিয়েছে। সকালে-বিকেলে থেমে থেমে ঝরেছে বৃষ্টি, আর সেই পানিতে ডুবে গেছে বাজারের একাধিক সড়ক ও গলিপথ। হাঁটুপানি মাড়িয়ে ক্রেতা-বিক্রেতারা যেমন চলেছেন, তেমনি সবজির ঝুড়ি টানতে হয়েছে ভ্যানে, কাঁধে কিংবা হাতে ধরে। ছবি: মাহবুব আলম
-
পানির এই দুর্ভোগে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন ক্ষুদ্র সবজি বিক্রেতারা। খোলা আকাশের নিচে বসে থাকা তাদের পক্ষে পলিথিনে ঢাকা দিয়েও সবজি বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
-
বিকেল হতে না হতেই অনেকেই যেন হাল ছেড়ে দিয়েছেন। একদিকে ক্রেতা কম, অন্যদিকে দীর্ঘক্ষণ পানির মধ্যে বসে থাকার কষ্ট-সব মিলিয়ে কেনা দামে সবজি বিক্রি করেই ফিরেছেন অনেকেই।
-
বাজারের এক প্রবীণ সবজি বিক্রেতা আফজাল হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টির দিনে সবজির চাহিদা কমে যায়। মানুষ কম আসে, আবার যারা আসে তারা দাম কম চায়। সকাল থেকে ভেজা শরীরে বসে থাকি, বিক্রিও হয় না ঠিকমতো। বাধ্য হয়ে যে দামে কিনেছি, সেই দামেই বিক্রি করছি। তাতেও লোকসান।’
-
আরেকজন তরকারি বিক্রেতা বলেন, পানি থইথই করছে চারপাশে। এক জায়গায় বসে থাকতে পারি না, জায়গা বদলালেও লাভ হয় না। সবজি তো বেশি সময় রাখা যায় না। তাই কম দামে বিক্রি করেই চলে যাচ্ছি।
-
বাজারে আসা ক্রেতারাও পড়েছেন ভোগান্তিতে। হাঁটুপানিতে হেঁটে বাজারে ঢোকার পর যেখানে সেখানে পচা সবজি, কাদা ও দুর্গন্ধে বিরক্ত হয়েছেন অনেকেই।
-
পানিতে ভাসছে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্য।
-
বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দামে বড় ওঠানামা না থাকলেও বাজারের পরিবেশে এই জলাবদ্ধতা যে এক বিশাল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় প্রতিবারই বর্ষা মৌসুমে এমন চিত্র দেখা যায়।
-
বিশেষজ্ঞদের মতে, কাওরানবাজারের আশপাশে যথাযথ নালা-নর্দমার অভাব, বাজারের ভেতর অপরিকল্পিত দোকান বসানো এবং নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়া-এই জলাবদ্ধতার মূল কারণ। এর স্থায়ী সমাধান ছাড়া বিক্রেতাদের এমন লোকসান ও ক্রেতাদের ভোগান্তি বারবারই ঘটবে।