পানির নিচে লুকানো ফাঁদ, মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই চলাচল
ঢাকার মাদারটেক সড়ক যেন এখন পথ নয়, ফাঁদের জাল। বৃষ্টি নামলেই সড়কের গর্তগুলো ঢেকে যায় জমে থাকা পানিতে। আর সেই পানির নিচেই লুকিয়ে থাকে মৃত্যুঝুঁকি। কখন কোন চাকা পড়ে যায় অদৃশ্য গর্তে, তা বোঝার উপায় নেই পথচারী বা চালকের। রিকশা, মোটরসাইকেল, এমনকি অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত থেমে যায় এই গহ্বরের মুখে। প্রতিদিনই যেন একটু সাহস, একটু কষ্ট আর একটু ভয় নিয়ে চলতে হয় এই সড়ক দিয়ে। ছবি: বিপ্লব দীক্ষিৎ
-
রাজধানীর ব্যস্ততম এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু সামান্য বৃষ্টি হলেই যেন অভিশাপ নেমে আসে এখানে। সড়কজুড়ে জমে থাকা পানি আর গর্তের মিশেলে প্রতিদিন সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ ভোগান্তি।
-
সড়কের কোথাও কোথাও খানাখন্দ এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, তা আর কেবল ‘অসমান’ নয়, হয়েছে বিপজ্জনক।
-
বর্ষা এলেই পুরো রাস্তা রূপ নেয় জলাশয়ে। আর সেই পানির নিচে লুকিয়ে থাকা গর্ত যেন হয়ে ওঠে মৃত্যুফাঁদ।
-
পানি জমে থাকায় অনেক সময় বোঝাই যায় না কোথায় গর্ত, কোথায় পথ। ফলে পথচারী ও যানবাহন চালকরা পড়ছেন মারাত্মক ঝুঁকিতে।
-
পথচারীদের পাশাপাশি চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যানবাহন চালকদেরও। এক রিকশাচালক বলেন, একটা গর্তে রিকশার চাকা পড়ে গেলে টানতেই পারি না। যাত্রী নামিয়ে ঠেলে বের করতে হয়। রাস্তার মধ্যে এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে গেলে মনে হয় রিকশা ভেঙে যাবে।
-
আরেক মোটরসাইকেল আরোহী জানান, বৃষ্টির পর তো বোঝাই যায় না কোথায় গর্ত।
-
এই দুরবস্থার সবচেয়ে বড় শিকার হয়ে উঠেছে জরুরি সেবা পরিবহন। বিশেষ করে ওষুধ সরবরাহকারী গাড়িগুলো সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না।
-
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার এমন দুরবস্থা চললেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এক সময় সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তা ছিল খণ্ডকালীন, দায়সারা। ফলে আজও মাদারটেক সড়কটি ঢাকার অন্যান্য এলাকার সঙ্গে ‘ঝুঁকিপূর্ণ রোড’ তালিকায় রয়ে গেছে।
-
এক অভিভাবক বলেন, স্কুলে নিয়ে যাওয়ার সময় বাচ্চাকে কোলে তুলে চলতে হয়। রিকশায় উঠলে ভয় হয়, হঠাৎ উল্টে না যায়। বৃষ্টি হলে তো একেবারে বের হওয়া বন্ধ করে দেই।
-
যেখানে রাজধানীর প্রতিটি সড়ক উন্নয়নের দাবি তোলে, সেখানে মাদারটেকের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকার এমন বেহাল অবস্থা একপ্রকার লজ্জার বিষয়।রাস্তার গর্ত শুধু বাহ্যিক সমস্যা নয়, এটি প্রতিদিন মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলছে, অর্থনৈতিক ক্ষতি করছে এবং প্রকারান্তরে নাগরিক জীবনের প্রতি অবহেলার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরছে।