ভ্যাপসা গরমে ঢাকার রাস্তায় জীবনযুদ্ধ
ঢাকার আকাশে সকাল থেকে রোদটা ছিল কড়াইয়ের আঁচের মতো। রোদে পুড়ে যাওয়া শুধু নয়, তার সঙ্গে মিশে আছে এক অস্বস্তিকর ভ্যাপসা গরম। ঘামে ভিজে যাচ্ছে জামা-কাপড়, হাঁটতে গিয়েই নিঃশ্বাস ভারী হয়ে উঠছে। শহরের প্রতিটি মোড়ে যেন গরম বাতাস থেমে আছে, কারও ওপর করুণা দেখানোর সুযোগ নেই। ছবি: মাহবুব আলম
-
এই দমবন্ধ করা গরমের মধ্যেই জীবিকার প্রয়োজনে হাজারো মানুষ ছুটছেন অফিসে, বাজারে কিংবা দিনমজুরের কাজের খোঁজে।
-
ঘাম ঝরাতে ঝরাতে রিকশাচালক চালাচ্ছেন তার রিকশা, নির্মাণ শ্রমিক সিমেন্ট-ইটের বোঝা বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন মাথায়।
-
শহরের প্রতিটি রাস্তা যেন সাক্ষী হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষের জীবনযুদ্ধের।
-
তৃষ্ণার্ত মুখে কারও হাতে দেখা যাচ্ছে ঠান্ডা পানির বোতল, কেউবা ছুটে যাচ্ছেন শরবতের দোকানে।
-
লেবুর শরবত কিংবা পেঁপের শরবতের সামনে লম্বা লাইন-এই পানীয় যেন মুহূর্তের জন্য হলেও মানুষের শরীরে প্রাণের সঞ্চার ঘটায়। গরমে হাঁসফাঁস করা পথচারীদের কাছে এক গ্লাস ঠান্ডা শরবত হয়ে উঠছে আশীর্বাদের মতো।
-
তবে এই তীব্র গরমে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন যারা খোলা আকাশের নিচে কাজ করতে বাধ্য। ট্রাফিক পুলিশ রাস্তায় দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করছেন, রাস্তার হকার ঘাম মুছতে মুছতে পণ্য সাজাচ্ছেন। তাদের কারও কাছে নেই এসি রুম বা শীতল বাতাসের সুবিধা।
-
জীবনযুদ্ধই তাদের একমাত্র ভরসা, আর সে যুদ্ধের সহযাত্রী হচ্ছে ঠান্ডা পানি কিংবা শরবতের এক চুমুক।
-
ঢাকার এই ভ্যাপসা গরম মানুষকে যেমন কষ্ট দিচ্ছে, তেমনি মনে করিয়ে দিচ্ছে পানির মূল্যও। এক বোতল ঠান্ডা পানি এখানে হয়ে উঠছে স্বস্তির সঙ্গী, আর এক গ্লাস শরবত হয়ে যাচ্ছে কর্মজীবী মানুষের দিনের শক্তি।
-
তবুও জীবন থেমে থাকে না। তীব্র গরমেও শ্রমজীবী মানুষের ঘামে ভিজে চলা শহর যেন বারবার বলে যায়, ঢাকা শুধু ইট-পাথরের শহর নয়, এটা এক অদম্য সহিষ্ণুতার গল্প।